• হরিণের মুখে চিপসের প্যাকেট! দুশ্চিন্তা ছবিতে
    এই সময় | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • অর্ঘ্য বিশ্বাস, লাটাগুড়ি: রেল লাইন লাগোয়া জঙ্গল। সেখানে দাঁড়িয়ে একটি হরিণ। দেখা যাচ্ছে, সেই হরিণের মুখে একটি চিপসের প্যাকেট! সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুয়ার্সের চাপড়ামারি রেল লাইনের পাশে এমন একটি ছবি ভাইরাল হতেই সরব হয়েছেন নেটিজ়েনরা।

    শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারগামী এই রুটের একদিকে যেমন মহানন্দা বনাঞ্চল রয়েছে, তেমনি চালসা–নাগরাকাটাগামী রেলপথের মধ্যে চাপড়ামাড়ির জঙ্গল। অন্যান্য বনাঞ্চলের তুলনায় এখানে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা অনেক বেশি। হাতি, গন্ডার, হরিণ, বাইসন, লেপার্ড, ময়ূর-সহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ এলাকাজুড়ে।

    এই রুটে সারাদিনে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন-সহ একাধিক প্যাসেঞ্জার ও মালগাড়ি যাতায়াত করে। যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই চলন্ত ট্রেন থেকে রেললাইনের পাশে চিপস বা অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বাইরে ফেলেন। এ সব ফেলে দেওয়া খাবারের প্যাকেটের টানে রেললাইনের পাশে চলে আসে বন্যপ্রাণীরা। চাপড়ামাড়ি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া রেলপথের দু'প্রান্তেই দিনে দিনে বাড়ছে এই প্রবণতা। যত্রতত্র নানা সামগ্রী ছুড়ে ফেলায় একদিকে পরিবেশের উপর প্রভাব যেমন পড়ছে, তেমনই বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

    সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জঙ্গলের এই রেলপথে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিকের প্যাকেট। ভাইরাল ছবিতে সে রকম একটি প্যাকেট মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে হরিণকে।

    'হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন'-এর (ন্যাফ) মুখপাত্র, পরিবেশবিদ অনিমেষ বসু বলেন, 'এটা মারাত্মক চিন্তার বিষয়। এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ার আগে রেল এবং বন দপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্লাস্টিকের প্যাকেট কোনও ভাবে হরিণ-সহ অন্য বন্যপ্রাণীর পেটে গেলে তা মারাত্মক হতে পারে।'

    আরও এক পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, 'ওই সমস্ত নোংরা প্লাস্টিকের সামগ্রী নিঃসন্দেহে ট্রেন থেকেই ফেলা হচ্ছে। অতি দ্রুত বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

    চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া সামগ্রীর টানেই বন্যপ্রাণীরা রেললাইনে চলে আসছে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।' গোরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের এডিএফও রাজীব দে–র বক্তব্য, 'এই ধরনের ঘটনা হয়ে থাকলে দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি জঙ্গলের ওই জায়গা প্লাস্টিকমুক্ত করতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

    জলপাইগুড়ি জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রাণী বিজ্ঞানী বিপ্লব দাসের কথায়, 'যে কোনও প্রাণীর জন্য প্লাস্টিক ক্ষতিকর। খাদ্যনালীতে আটকে যাওয়ার পাশাপাশি শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।' আলিপুরদুয়ার রেলের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতমকে ফোন করা হলেও তাঁর বক্তব্য মেলেনি।'

  • Link to this news (এই সময়)