বিয়ের ৩০ বছর পর স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন ৬১ বছরের বৃদ্ধ বিশ্বজিৎ দাস। মঙ্গলবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। চুঁচুড়া আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক শুভ্রা ভৌমিক ভট্টাচার্য এই খুনের মামলায় সাজা ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি। বলাগড়ের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ৫৫ বছরের চন্দনা দাসের প্রবল ঝগড়া হয়। রাগের মাথায় স্ত্রী চন্দনা দাসের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন বৃদ্ধ। আগুনে সাংঘাতিক ভাবে পুড়ে যান তিনি। তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ঘটনার দুদিন পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতালে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে স্বামীকে দায়ী করে যান চন্দনা দাস। তিনি জানান, বিয়ের দশ বছর পর থেকে তাঁর উপর লাগাতার শারীরিক নির্যাতন চলত। মদ্যপ অবস্থায় মারধর করতেন স্বামী।
দম্পতির বড় মেয়ে সরসী দাস মায়ের মৃত্যুর পর বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বলাগড় থানায়। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ২৭ জানুয়ারি অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ দাসকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করে। মামলার সরকারি আইনজীবী ছিলেন প্রশান্ত আগরওয়াল এবং আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী ছিলেন শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায়। মামলায় মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সমস্ত সওয়াল জবাব শোনার পর ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গত ৫ এপ্রিল অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ৪৯৮ এ ধারায় ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে একমাস জেল। ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত।