• কল্যাণের 'কুকথায়' নাকি কেঁদে ফেলেছিলেন মহুয়া, দাবি তৃণমূলেরই সাংসদের
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • মহুয়া মৈত্রকে নাকি গত ৪ এপ্রিল অকথ্য ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে কল্যাণের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন দলের অপর বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি দাবি করলেন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝামেলার জেরে মহুয়া মৈত্রকে কাঁদতে দেখা গিয়েছিল। এদিকে 'আচরণগত সমস্যার' কারণে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন সৌগত রায়।

    কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার 'অসভ্য' বলে সম্বোধন করেন সৌগত রায়। তাঁর অভিযোগ, দলের 'অভ্যন্তরীণ বিষয়' ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে শ্রীরামপুরের সাংসদ একটি বোতল ভেঙে প্যানেলের চেয়ারম্যানের দিকে ছুঁড়ে মেরেছিলেন, সেই সব নিয়ে কি আমি মুখ খুলেছিলাম? তিনি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে 'লেডি কিলার' বলেছিলেন এবং পরে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। অসংযমী এবং অসভ্য আচরণের জন্য পরিচিত কল্যাণ। এখনও পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে কথা বলিনি কারণ এটা আমার এটা আমার সম্মানে বাধে।' এদিকে সেদিনের ঘটনা নিয়ে সৌগত বলেন, 'কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রের মধ্যে যখন বচসা হয়, তখন আমি সেখানে ছিলাম না। আমি বিজয় চকে ছিলাম। পরে দেখলাম মহুয়া কাঁদছেন এবং কল্যাণের আচরণ নিয়ে বেশ কয়েকজন সাংসদের কাছে নালিশ করছেন। যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।' এরপর সৌগত আরও বলেন, লোকসভায় দলের মুখ্য সচেতক পদ থেকে কল্যাণকে সরানো উচিত। কল্যাণ যে এই পদে থাকার যোগ্য নন, তা আমার কাছে স্পষ্ট।

    রিপোর্ট অনুযায়ী এই গোটা ঘটনার সূত্রপাত গত ৪ এপ্রিল। সেদিন নির্বাচন কমিশনে প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের। সেখানে যোগ দেওয়ার আগে দিল্লিতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন সাংসদরা। সেখানে এক মহিলা সাংসদ দেখেন স্মারকলিপির যেখানে সই করতে হবে সেখানে তাঁর নাম নেই। এরপর তিনি এনিয়ে প্রশ্ন করেন। তারপর হাতে তাঁর নাম লিখে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর নির্বাচন কমিশনের ভবনের কাছেও তার রেশ চলতে থাকে। দাবি করা হয়, সেই মহিলা সাংসদ নাকি মহুয়া মৈত্র। এদিকে এই সময় অনলাইনের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, এক সাংসদের দাবি, নির্বাচন কমিশনে পৌঁছনর পরেও মহুয়াকে লক্ষ্য করে যাচ্ছেতাই ভাষায় মন্তব্য করে যাচ্ছিলেন কল্যাণ। তাতে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন সাংসদ তো বটেই, এমনকী নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক, সেখানে ডিউটিরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও নাকি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন। কল্যাণ নাকি ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত করেছিলেন সবার সামনে। সেই সময় মহুয়া নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বলেন ওঁকে সামলাতে। এমনকী কল্যাণের গ্রেফতারির দাবি তোলেন মহুয়া।

    এরপর একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মহুয়ার সমর্থনে কীর্তি আজাদ কল্যাণকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছিলেন, দিদি সবাইকে নিয়ে চলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে তাতে ক্ষান্ত হননি এই প্রবীণ সাংসদ। গ্রুপে কীর্তিকে নানা কটাক্ষ করেন কল্যাণ। এমনকী মহুয়াকে ইন্টারন্যাশানাল গ্রেট লেডি বলেও কটাক্ষ করেন। এমনকী অশালীন নানা মন্তব্য করা হয়েছিল গ্রুপে। এরপরই রাতে মহুয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান বলে খবর। অন্যদিকে গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এমনকী নেত্রীর কানেও গোটা বিষয়টি গিয়েছে বলে খবর। এদিকে এই সময় অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কল্যাণ নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, দিল্লির পার্টি অফিসে পৌঁছনর পরে ওই মহিলা সাংসদই প্রথমে আমার সঙ্গে অভদ্র আচরণ করেন। অত্যন্ত খারাপ ভাষায় কথা বলেন। তবে এই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে এখনও সেই মহুয়ার প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)