• স্বামীকে খুন, যাবজ্জীবন সাজা স্ত্রীর
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: অবৈধ সম্পর্কের জেরে প্রায় দু’বছর আগে প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল স্ত্রী’র বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার হয়েছিল স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল এবং তার প্রেমিক মহম্মদ নফরুল। মামলা চলছিল। সোমবার মঞ্জুকে দোষী সাব্যস্ত করে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালত। মঙ্গলবার তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। যদিও নফরুলের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না মেলায়, তাঁকে আদালত বেকসুর খালাস করেছে। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত মহিলা মঞ্জুর বাড়ি শিলিগুড়ি মহকুমার বিধাননগরে। আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, পরিকল্পনা করে মঞ্জু স্বামী সুবোধ মণ্ডলকে খুন করেছে। ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট বিধাননগরে ওই খুনের ঘটনাটি ঘটে। সুবোধ মণ্ডল বিধাননগরেরই বাসিন্দা ছিলেন। খুনের পরের দিন ১৯ আগস্ট বিধাননগর ইনভেস্টিগেশন সেন্টারে লিখিত অভিযোগ জমা হয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিস। তদন্তের শুরুতেই পুলিস জানতে পারে, পেশায় কবিরাজ এক ব্যক্তির সঙ্গে কোনও ভাবে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সুবোধের স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল। চিকিৎসার অছিলায় বিভিন্ন সময় দু’জন দেখা করত। একসময় অবৈধ সম্পর্কেও জড়ায়। আচমকাই একদিন দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন সুবোধ। এরপর স্ত্রী মঞ্জু ও তার প্রেমিকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন সুবোধ। দু’জন যাতে আর কোনও সম্পর্ক না রাখে, সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সুবোধ। তবে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত মঞ্জু স্বামীর কথা কানে তোলেনি। পথের কাঁটা সুবোধকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে সে।  

    সরকারি আইনজীবী গৌতম সাহা বলেন, আদালতের কাছে সাক্ষ্য প্রমাণে উঠে আসে, ১৮ আগস্ট রাত ২টো নাগাদ মঞ্জু মণ্ডল স্বামী সুবোধ মণ্ডলকে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে খুন করে। এরপরেই তার প্রেমিককে ডেকে ঘটনার কথা জানায় সে। পুলিস দু’জনকেই গ্রেপ্তার করে। প্রথমে পুলিস নিজে থেকে তদন্ত শুরু করলেও, পরে সুবোধের ভাই থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। ধৃত দু’জনকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত। নির্দিষ্ট সময়েই পুলিস চার্জশিট জমা করে। একাধিক সাক্ষী প্রমাণ নিয়ে মামলা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ি আদালত মঞ্জু মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করে। এদিন তার সাজা ঘোষণা করেন মহকুমা আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জাজ ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মৈনাক দাশগুপ্ত। সরকারি আইনজীবী বলেন, আদালত এদিন মূল হত্যাকারী মঞ্জু মণ্ডলের সাজা ঘোষণা করেছে। বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। 

    যদিও সোমবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী গৌতম সাহা জানিয়েছিলেন, মঞ্জু মণ্ডল নয়, মহম্মদ নফরুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী অবশ্য এদিন জানিয়েছেন, সেদিন নামটা দেখতে ভুল হয়েছিল। তাই বলেছিলাম মহম্মদ নফরুলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কিন্তু আদালতের রায়ে মহম্মদ নফরুল বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)