সংবাদদাতা, লালবাগ: খোলা ট্রলিতে ময়লা-আবর্জনা ভর্তি করে শহরের ভিতর দিয়ে ছুটছে ট্রাক্টর। সেগুলি ঢাকা না থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শহরের বাসিন্দা থেকে পথ চলতি সাধারণ মানুষ এবং পর্যটকদের নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না। এদিকে ট্রলি থেকে ময়লা-আবর্জনা, প্লাস্টিক ছিটকে পড়ে শহরের রাস্তাঘাট নোংরা হচ্ছে। পাশাপাশি দৃষ্টি ও পরিবেশ দুইই দূষিত হচ্ছে। দিনের কর্মব্যস্ত সময়ে শহরের জনবহুল এলাকার মধ্য দিয়ে পুরসভার ময়লা-আবর্জনার গাড়ি চলাচল করায় রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ পুরসভার সর্বস্তরের মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে শহরজুড়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছেও খারাপ বার্তা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিধি মেনে ট্রলি ঢেকে নোংরা-আবর্জনা নিয়ে যাওয়া হোক বলে দাবি করেছেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ধর বলেন, দু-একটি পুরনো গাড়ির ট্রলিতে ঢাকনা নেই শুনেছি। বাকিগুলিতে ঢাকনা রয়েছে। পুরনো ট্রলিকে ঢেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি।
লালবাগ মহকুমার সদর শহর লালবাগ বা মুর্শিদাবাদ। লালবাগ শহরকে নিয়ে গড়ে উঠেছে মুর্শিদাবাদ পুরসভা। পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন সাফাই কর্মীরা সংগ্রহ করেন। পরে সেগুলি পুরসভার গাড়িতে নিয়ে গিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলা হয়। নাগরিকদের অভিযোগ, ট্রাক্টরেরউন্মুক্ত ট্রলিতে নোংরা-আবর্জনা চাপিয়ে শহরের ভিতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা যায়না। এভাবে জনবহুল এলাকার মধ্যে দিয়ে ময়লার গাড়ি নিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যবিধি সম্মত নয়। প্লাস্টিক, পলিথিনবা অন্য কিছু দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া উচিত। পুরসভার এই উদাসীনতায় নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরে অসুবিধা ভোগ করে চলেছেন। অথচ নাগরিকদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি নজর দেওয়া পুর কর্তৃপক্ষের নৈতিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা কমলেশ দাস বলেন, ট্রলির ঝাঁকুনিতে নোংরা-আবর্জনা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তায় পড়তে থাকে। এর ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। তাছাড়া পর্যটকরা সারা বছর এই শহরে আসেন। তাঁদের কাছেও শহর সম্পর্কে খারাপ বার্তা যাচ্ছে। নবাব নগরীর বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক সরোজ মণ্ডল বলেন, ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে নোংরা আবর্জনা যদি পড়তে থাকে, তাহলে সাফাই করে লাভ কী! পুরসভা এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। শহরের এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, সাবেক নবাব তালুকের অর্থনীতি পর্যটন নির্ভর। শহর নোংরা থাকলে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন। তার প্রভাব সর্বস্তরের মানুষের রুজিরোজগারে পড়বে। -নিজস্ব চিত্র