রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য শতাধিক বাড়ি ও দোকান উচ্ছেদের নোটিস, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি ফরাক্কার মহেশপুরের বাসিন্দাদের
বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: ফরাক্কার মহেশপুরে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরুর আগে উচ্ছেদ নোটিস দেয় পঞ্চায়েত। নোটিসে আগামী রবিবারের মধ্যে এলাকাবাসীকে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরে না গেলে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। গঙ্গা ভাঙনে সবকিছু খুইয়ে প্রায় হাজার খানেক মানুষ ওই এলাকায় আশ্রয় নেন। এলাকার বসতবাড়ি ও দোকানপাট মিয়ে অন্তত শতাধিক ঘর ভাঙা পড়বে। স্বভাবতই উচ্ছেদ নোটিস ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কোনও নিয়ম না মেনে ও এলাকাবাসীর কথা না শুনেই উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। উচ্ছেদ অভিযান না চালানোর আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি ভেবে দেখার ও অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে ফরাক্কার বিডিও জুনায়েদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি গ্রামপঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। যতদূর জানি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হবে,যারা সরকারি জায়গা দখল করে রয়েছে তাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ফরাক্কা ব্লকের মহেশপুর পঞ্চায়েতের মহেশপুর রেলগেট থেকে মহেশপুর ঘাট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিমি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হবে। কাজ শুরুর আগেই রাস্তা জবরদখল করে থাকা মানুষকে সরে যেতে বলা হয়েছে। মুস্কিনগর, বটতলা ও পিরতলা এই তিন এলাকার মধ্যে রাস্তাটি চলে গিয়েছে। এই পথ দিয়েই প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ধুলিয়ান, অর্জুনপুর ও ইমামনগরে যাতায়াত করে থাকে। রাস্তাটি সংকীর্ণ হওয়ার ফলে আপতকালীন যানবাহন ও পথচলতি সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়াও সরকারি রাস্তা দখল করেও অনেক দোকানপাট ও কাঁচাপাকা বাড়িও গড়ে উঠেছে বলে পঞ্চায়েতের দাবি। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ার ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেই রাস্তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন পঞ্চায়েত কর্মকর্তারা।
এলাকাবাসীর সমস্যার কথা না শুনেই সম্প্রতি পঞ্চায়েত কর্তারা রাস্তার জন্য জমি চিহ্নিত কারণের কাজ সম্পন্ন করে। তাতে অন্তত ৪০টি ছোটো বড়ো দোকানঘর ও অন্তত ৫০টি কাঁচা বাড়ি ভাঙা পড়বে। এমন অবস্থায় তাঁরা কোথায় যাবেন তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক মেহবুব আলম বলেন, গঙ্গাভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে কোনওরকমে জীবনধারণ করে থাকি। কোনও নিয়ম না মেনেই উচ্ছেদ নোটিস ধরানো হয়েছে। এলাকাবাসীকে সমস্যায় না ফেলে নিয়ম মেনে ব্যবস্থা করা হোক। গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান রোজিনা খাতুন বলেন, এলাকাবাসীর সুবিধার জন্যই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করা হচ্ছে। আশ্রয়হীন নয়টি পরিবারকে আপাতত স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের পুনর্বাসনের জন্য জমিও খোঁজ করা হয়েছে। প্রতীকী চিত্র