নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খাস কলকাতায় রক্তারক্তি কাণ্ড। মাঝরাতে গড়িয়াহাটের কাকুলিয়া রোডে প্রকাশ্য রাস্তায় ব্যবসায়ীকে চপার দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। বাঁচাতে গিয়ে আহত হন তাঁর এক বন্ধু। কোপানোর ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এক কাউন্সিলারের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আহত ও অভিযুক্ত দুজনেই একই রাজনৈতিক দলের সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। আহত রকি রাজবংশী (২৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা।
জানা গিয়েছে, রকি কেবলের ব্যবসা করেন। কাঁকুলিয়া রোডে কিছুদিন ধরে বেশ কয়েকজন যুবক নানা অসমাজিক কাজকর্ম চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। রকি তার প্রতিবাদ করছিলেন। এই নিয়ে ভোলা, যিশু ও পিঙ্কুর সঙ্গে তাঁর ছোটখাট গোলমাল হয়। তখন থেকেই তাঁকে টার্গেট করেছিল এই তিনজন। ঘটনাচক্রে তারা আবার কাউন্সিলের অনুগামী বলে পরিচিত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বিসর্জনের দিন ভোলার বাহিনী বাজি ফাটাচ্ছিল। সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রকি। বাজি তাঁর গায়ে পড়লে প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ এরপরই তাঁর উপর চড়াও হয় ওই তিনজন। তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আহত হন রকি। তখন থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। মাঝেমধ্যেই দুপক্ষে বিবাদ-বচসা হতো বলে জানা যাচ্ছে। রবিবার রাত দুটো নাগাদ আলোচনার জন্য ভোলা ও তার সহযোগীরা রকিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কেন তিনি এলাকায় মদ্যপানের প্রতিবাদ করছেন, এই নিয়ে ঝামেলা শুরু করে তারা। আচমকাই রকিকে মারধর করতে শুরু করে তিনজন। রকির পরিবার দাবি করেছে, তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারতে থাকে। তাদের সকলের কাছেই ছিল বড় ছুরি. চপার। আচমকাই অভিযুক্তদের একজন তার কাছে থাকা চপার বের করে রকির কাঁধে কোপাতে শুরু করে। কাঁধ থেকে কনুই পর্যন্ত একাধিকবার আঘাত করা হয়। এরপর দুজন তাঁকে চেপে ধরে। অন্য এক অভিযুক্ত পেটে চপার দিয়ে অনবরত আঘাত করতে থাকে বলে জানা যাচ্ছে। তাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়েন রকি। গোটা রাস্তা রক্তে ভেসে যায়। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে ফেলে রেখে পালায় অভিযুক্তরা। ভোর তিনটে নাগাদ স্থানীয় এক বাসিন্দা দেখেন রকি শরীরে একাধিক আঘাত নিয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছে। পরিবারের লোকজনকে খবর দেওয়া হলে, তাঁরা এসে রকিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। পেটে, কাধ ও কনুই মোট ৪৪টি সেলাই পড়েছে রকির। ঘটনার খবর পেয়ে আসে গড়িয়াহাট থানার পুলিস। খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সময় কারা কারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করেছে পুলিস। অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।