কসবা গুলিকাণ্ড সুপারি কিলার সুশীলকে জেরা করতে বিহার যাচ্ছে পুলিস
বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খুন-ডাকাতি, তোলাবাজি সহ মোট ৪০টি কেস ঝুলে রয়েছে বিহারে। সুপারি কিলার হিসেবে তার নামডাকও রয়েছে। এহেন গ্যাংস্টার সুশীল কুমারের নেতৃত্বে গত নভেম্বরে কলকাতা পুরসভার বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত (স্বরূপ) ঘোষকে খতমের জন্য বিহারের কুখ্যাতরা হাজির হয়েছিল কলকাতায়। সম্প্রতি বিহার পুলিসের সঙ্গে এনকাউন্টারের পর পাকড়াও করা গিয়েছে দু’হাতে বন্দুক চালাতে পারদর্শী সুশীলকে। সুশান্তবাবুর উপর হামলার ঘটনায় তার ভূমিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে চাইছে কলকাতা পুলিসের অ্যান্টি রাউডি স্কোয়াড। সুশীল এখন হাজিপুর জেলে বন্দি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাজিপুর জেলে যাচ্ছে কলকাতা পুলিসের টিম। অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
কসবায় কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় বিহারের গ্যাংয়ের নাম উঠে আসে। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বিহারের ডন পাপ্পু চৌধুরি সুশান্তকে নিকেশ করার সুপারি নিয়েছে। এরপর বিহার থেকে বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে লালবাজার। তাদের জেরা করে জানা যায়, পাপ্পুর ডানহাত বলে পরিচিত সুশীল কুমার কলকাতায় যাওয়া গ্যাংটিকে লিড করেছে। পাপ্পু ‘সুপারি’ নিলে, তার বরাত চলে যায় সুশীলের কাছে। বিহার পুলিসের খাতায় সুপারি কিলার হিসেবে তার নাম রয়েছে। সূত্রে খবর, পাপ্পুর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে সে বৈশালী এলাকায় বাইক নিয়ে ছিনতাই, লুট এবং গুলি চালানোর ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে পাপ্পু তাকে দলে টেনে নেয়। দু’হাতে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ হয় বৈশালীতে। তাকে সুপারি কিলার হিসেবে তৈরি করে পাপ্পু। এরপর বিহারের বিভিন্ন জেলায় পরপর খুন ,ডাকাতি করে রীতিমতো ত্রাস হয়ে ওঠে বিহার পুলিসের কাছে।
কসবাকাণ্ডে সুশীলের নাম উঠে আসার পরই বিহার পুলিসকে তা জানায় লালবাজার। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিহার পুলিস জানতে পারে, সুশীল আরা জেলায় জুয়েলারি দোকানে ১০ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে। কয়েকদিন আগে পুলিসের কাছে খবর আসে, সে বিধুপুরে ডাকাতির জন্য জড়ো হয়েছে। সেইমতো বিধুপুর থানার ইনসপেক্টর অরুণ কুমারের নেতৃত্বে টিম এলাকায় পৌঁছতেই পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে সুশীল। পুলিসও পাল্টা গুলি চালালে একটি গুলি তার পায়ে লাগে। গুলিতে আহত হয় তার এক সঙ্গীও। গ্যাংস্টার সুশীলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিহার পুলিসের অফিসাররা জানতে পারেন তার গুরু পাপ্পুর কলকাতায় ডেরা ছিল। তার সঙ্গে সে কলকাতায় এসছে একাধিকবার। শহরে এলে গুলশন কলোনিতে আশ্রয় নিত। বিহারে অপরাধ করার পর অনেকবার সে কলকাতায় পালিয়ে এসে থেকেছে। গুলশন কলোনীর এক দুষ্কৃতী তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এমনকী কলকাতা লাগোয়া এলাকায় সে সুপারি নিয়ে খুনও করে গিয়েছে। পাশাপাশি গুলশন কলোনির এক দুষ্কৃতীকে আর্মস দিয়ে গিয়েছে। কসবাতে সে এসেছিল বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছে। ঘটনার আগের দিন সে কলকাতায় আসে। লেকটাউন এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ছিল। ঘটনার পর সে বিহারে পালিয়ে যায়।