রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিলে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পাশেই থাকা হাইস্কুলের শিক্ষিকা ও ক্লার্কদের বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটনাটি নজরে আসে প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষের। তারপরই প্রবল বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। হাই স্কুলের শিক্ষিকা ও ক্লার্কের একাংশের বিরুদ্ধে কাঁথি থানা, মহকুমা শাসক, শিক্ষাদপ্তর থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সমস্ত জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি ত্রিপাঠি।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে, কাঁথি পুরসভার চন্দ্রামনি ব্রাহ্ম বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পাশেই রয়েছে কাঁথি চন্দ্রামনি ব্রাহ্ম বালিকা হাই স্কুল। একই ক্যাম্পাসে দু’টি বিদ্যালয় চলে। কাঁথি পুরসভার থেকে ওয়ার্ক অর্ডার নিয়ে প্রাথমিক স্কুলে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার অভিজিৎ রায়। প্রথম তলের বেশ কিছুটা নির্মাণও হয়ে যায়। অভিযোগ, কাঁথি চন্দ্রামনি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়েরই বেশ কয়েকজন শিক্ষিকা ও ক্লার্ক মঙ্গলবার সেই নব নির্মিত নির্মাণ ভেঙে দেয়।
পড়ুয়াদের জন্য সরকারি উন্নয়নের কাজ কেন হাই স্কুলের শিক্ষিকা ও ক্লার্ক ভেঙে দিলেন? সেই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। আরও অভিযোগ, প্রাথমিকের ভবন নির্মাণের জন্য ইট, বালি,পাথর প্রভৃতি আসার পরেও হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ তা বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি। ইট, বালি এখন রাস্তায় পড়ে রয়েছে। সরকারি স্কুলের সামগ্রী চুরি হয়ে গেলে, দায় কে নেবে? প্রশ্ন তুলেছে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, প্রায় তিন মাস ধরে হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের সামনের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে রেখেছেন। মিড ডে মিলের ঘরও তালা বন্ধ। তার জেরে ছোট পড়ুয়ারা মাটিতে ধুলোবালির মধ্যে বসে মিড-ডে মিল খেতে বাধ্য হয় বলেও অভিযোগ। উল্লেখ্য, ব্রাহ্ম গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯০৭ সাল থেকে এখানেই পঠন-পাঠন চলছে। এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৬৫০ জন। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা কাঁথি থানায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ও ক্লার্কদের গ্রেপ্তারির দাবি জানিয়েছেন। তবে হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।