• কাল জলপাইগুড়িতে পিএফ অফিস ঘেরাও শাসকদলের চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্সের চা বলয়ে কোটি কোটি টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া। বছরের পর বছর ধরে চা শ্রমিকরা পিএফ থেকে বঞ্চিত। অথচ হাতগুটিয়ে বসে রয়েছে পিএফ কর্তৃপক্ষ। কিছু ক্ষেত্রে আবার পিএফ অফিসে টাকা তুলতে এসে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে চা শ্রমিকদের। এমনই অভিযোগে কাল, শুক্রবার জলপাইগুড়িতে পিএফ অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা মন্ত্রী মলয় ঘটক, বুলুচিক বরাইক, রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রকাশচিক বরাইকের।

    তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল সোনারের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার দুই জেলা মিলিয়ে অন্তত ৫০টি বাগানে শ্রমিকদের পিএফের টাকা ঠিকমতো জমা পড়ছে না। অনেক ক্ষেত্রে আবার শ্রমিকদের মজুরি থেকে পিএফের টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মালিকরা টাকা দিচ্ছেন না। অনেক বাগানে আবার পিএফ ফাঁকি দিতে শ্রমিকদের সংখ্যা কম দেখানো হচ্ছে। অথচ পিএফ কর্তৃপক্ষের কোনও হুঁশ নেই। এরই প্রতিবাদে কাল জলপাইগুড়িতে আঞ্চলিক পিএফ কমিশনারের অফিস ঘেরাও করতে চলেছি আমরা।  

    ঘেরাও অভিযানে শামিল হতে গত মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের অসম সীমানার সঙ্কোশ বাগান থেকে পদযাত্রা শুরু করেছেন চা শ্রমিকরা। একইভাবে জলপাইগুড়ির এলেনবাড়ি চা বাগান থেকেও একটি পদযাত্রা শুরু হয়েছে। দু’টি পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শ্রমিকরা আজ, বৃহস্পতিবার গয়েরকাটায় মিলিত হবেন। সেখান থেকে শুক্রবার তাঁরা জলপাইগুড়িতে পৌঁছে ঘেরাও করবেন পিএফ অফিস।

    চা শ্রমিকদের পিএফের টাকা ঠিকমতো জমা না পড়া নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি জলপাইগুড়িতে এসে তোপ দেগেছিলেন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। পিএফ অফিস ‘ঘুঘুরবাসা’য় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই দপ্তর ঘেরাওয়ের ডাক দেন তিনি। সেইমতো এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। তাদের তোপ, আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৪টি চা বাগানের মধ্যে মাত্র পনেরোটি বাগানে শ্রমিকদের পিএফের টাকা ঠিকমতো জমা পড়ে। একই অবস্থা জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগানগুলিতেও। গোটা ডুয়ার্সের চা বলয়ে শ্রমিকদের বকেয়া পিএফের পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা।

    কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থার চা বাগানগুলিতেও দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের পিএফের টাকা জমা পড়ছে না বলে অভিযোগ। এনিয়ে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে চাপের মুখে সম্প্রতি এমন তিনটি বাগান মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পিএফ কর্তৃপক্ষ। খোদ পিএফ দপ্তর সূত্রে খবর, ওই তিনটি বাগানে শ্রমিকদের বকেয়া পিএফের পরিমাণ পাঁচ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।

    পিএফ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, সময়ে পিএফ জমা না দেওয়ায় গত পাঁচ বছরে তারা ডুয়ার্সের ৩৩টি বাগানের মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। পাঁচটি বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
  • Link to this news (বর্তমান)