• এবার অনলাইন ও ডোরস্টেপ ব্যাঙ্কিং চালু হবে উত্তরবঙ্গের সমবায় সমিতিতে: মন্ত্রী
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দক্ষিণবঙ্গের পর উত্তরবঙ্গে। প্রাথমিক কৃষি ঋণদান সমিতির (পিএসিএস) মাধ্যমে ‘অনলাইন’ ও ‘ডোরস্টেপ ব্যাঙ্কিং’ পরিষেবা চালুর উদ্যোগ রাজ্যের। বুধবার শিলিগুড়িতে জোনাল পর্যায়ের বৈঠকের পর এ কথা জানান সমবায়মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। 

    একইসঙ্গে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্বচ্ছতা বাড়াতে প্যাকসের গ্রাহকদেরও (পিএসিএস) কেওয়াইসি নেওয়া হচ্ছে। মাত্র দু’মাসে উত্তরবঙ্গে কেওয়াইসি দাখিল হয়েছে মোট গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশ। তবে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট ‘ডরমেন্ট’ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে রাজ্য স্তরে আলোচনা করে নতুন পলিসি তৈরি করা হবে। 

    এদিন শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে জোনাল পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা করেন সমবায়মন্ত্রী। সভায় মন্ত্রী ছাড়াও সমবায় দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কৃষ্ণ গুপ্তা, যুগ্ম সচিব শঙ্খ সাঁতরা সহ কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার সমবায় দপ্তরের আধিকারিকরা, জেলা ও সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক, কনজিউমার ক্রেডিট সোসাইটির প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে সমবায় ব্যবস্থা নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের মতো এখানেও সমবায়গুলিতে অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

    পরে মন্ত্রী বলেন, পূর্ব বর্ধমান সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় প্যাকসে অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু রয়েছে। রাতে সহ যেকোনও সময় টাকার প্রয়োজন পড়লে প্যাকস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন গ্রাহকরা। 

    কর্তৃপক্ষ ই-পস মেশিন নিয়ে গ্রাহকের বাড়িতে হাজির হচ্ছেন। রুপে কার্ড সোয়াইপ করে সঙ্গে সঙ্গে হাতে টাকা পাচ্ছেন গ্রাহকরা। 

    পাশাপাশি বাড়িতে বসেই অনলাইনে গ্রাহকরা প্যাকসে টাকা জমা দিতে পারছেন। বিদেশের সঙ্গেও অর্থ লেনদেন করছে সেগুলি। উত্তরবঙ্গের সমস্ত প্যাকসে এই পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্যাকসগুলিকে কম্পিউটার দেওয়া হবে। সেগুলির কর্মীদের ট্রেনিংও দেওয়া হবে। 

    উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল ভাগের সমস্ত গ্রামে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা নেই। তাই সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দারা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির উপর নির্ভরশীল। গ্রামবাসীরা সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলিতে টাকা গচ্ছিত রাখার পাশাপাশি ঋণও নেন। গ্রামবাসীরা বলেন, প্যাকসগুলিতে অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এতে ব্যাপক সুবিধা হবে। 

    এদিনের বৈঠকে প্যাকেসের পাশাপাশি আর্বান ক্রেডিট সোসাইটি এবং কনজিউমার ক্রেডিট সোসাইটির কাজকর্ম পর্যালোচনা করা হয়। স্বচ্ছতা বাড়াতে সর্বত্র গ্রাহকদের কেওয়াইসি গ্রহণে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের আট জেলায় অর্থ গচ্ছিত রাখার প্যাকসের সংখ্যা প্রায় ২৯১টি। এতে ডিপজিট অ্যাকাউন্ট বা আমানতকারীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১১ জন। এরমধ্যে কেওয়াইসি দাখিল করেছেন ৬ লক্ষ ২৯ হাজার ৭৬৩ জন। যা ৭৬.৯১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত কেওয়াইসি দাখিল করেননি ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৮০ জন।  
  • Link to this news (বর্তমান)