• তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়ি থেকে উদ্ধার মাদক তৈরির সরঞ্জাম, ধৃত ৬
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শীতলকুচি: ভোররাত সাড়ে ৩টে। তখনও বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙেনি। কিছু বুঝে ওঠার আগে একের পর এক পুলিসের গাড়ি গ্রামে ঢুকে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বাড়ি ঘিরে ফেলে। গ্রামবাসীদের নাকের ডগায় তাঁর বাড়িতে চলছিল মাদক তৈরির কারবার, যা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি গ্রামবাসীরা। পুলিসি অভিযানে বানচাল হয় মাদক তৈরির ছক। বুধবার সকালে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় শীতলকুচি ব্লকের গোলেনাওহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঠানটুলিতে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের তাহিজুল মিয়াঁর বাড়িতে অবৈধ মাদক তৈরির কারবার চলছিল। তাঁর বাড়ি থেকে মাদক তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে। 

    তাহিজুলের স্ত্রী জেসমিন বিবি পঞ্চায়েত সদস্য। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই পলাতক থাকলেও পুলিস ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস জানিয়েছে, বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে মাদক দ্রব্য তৈরি হচ্ছিল। ব্রাউন সুগার বা হেরোইনের মতো মাদক তৈরিতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে হাবিবুর রহমান, শাহিন রেজা ও করিম শেখ মালদহের কালিয়াচক থানা এলাকার বাসিন্দা। আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁওয়ের আব্দুল গনি, মফিজুল আলম এবং শিলিগুড়ির বাসিন্দা বাপুন পাল। 

    তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বাড়িতে এমন কারবার প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন কটাক্ষ করে বলেন, অবৈধ মাদক কারবারে তৃণমূল নেতাদের নাম জড়াবে এ কোনও নতুন ঘটনা নয়।  সাধারণ মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে। 

    তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন অবশ্য জানান, দলে সবধরনের লোকই থাকে। এক-দু’জন খারাপ থাকতেই পারে। এতে দলে কোনও প্রভাব পড়বে না। আমরা চাইব পুলিস শক্তহাতে অন্যায়ের মোকাবিলা করুক। পঞ্চায়েত সদস্যা দোষী হলে দলীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    অন্যদিকে, মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাড়ির মালিক তাহিজুল মিয়াঁর বিরুদ্ধে এনডিপিএস অ্যাক্টে মামলা রুজু করা হয়েছে। তিনি পলাতক।   ধৃতদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিস। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)