সাত মাসে ৭২টি সমিতি জয়, মন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট সৌরভের
বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: কৃষি সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয় জয়কার তৃণমূল কংগ্রেসের। সাত মাসে তারা শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার মোট ৭২টি সমিতির বোর্ড দখল করেছে। অধিকাংশই বিরোধী শূন্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কার্যকলাপের জেরেই এমন সাফল্য মিলেছে বলে জলপাইপগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি। বুধবার তিনি শিলিগুড়িতে সমবায়মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কাছে এই রিপোর্ট পেশ করেন। এ ব্যাপারে নিজেদের ব্যর্থতা ঘুরিয়ে মানলেও তৃণমূলের সমালোচনা করেছে বিজেপি। সমগ্র বিষয় নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে, সমবায়মন্ত্রী প্রদীপ মজুদার বলেন, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রায় চার হাজারটি সমবায় সমিতির নতুন পরিচালন বোর্ড গঠন হয়েছে। সেগুলিতে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। সেগুলির মাধ্যমে গ্রামবাসীদের বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা প্রদানের কাজে গতি এসেছে।
জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের অধীনে কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির সংখ্যা অসংখ্য। রাজ্য সরকারের নির্দেশে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলিতে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন পরিচালন বোর্ড গঠন করা হচ্ছে। ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর,তাদের অধীনে সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ৪০০টি। এতে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার জন। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ভোট হয়েছে ৭২টি সমিতিতে। যারমধ্যে জলপাইগুড়ি সদরের ১৭টি, ময়নাগুড়িতে ২১টি, রাজগঞ্জে ন’টি, মালবাজারে ছ’টি, ধূপগুড়িতে সাতটি, কোচবিহার জেলার হলদিবাড়িতে পাঁচটি এবং শিলিগুড়িতে সাতটি সমিতি রয়েছে। অধিকাংশই বিরোধীশূন্য। হাতেগোনা কয়েকটি সমিতিতে দুই থেকে তিনটি আসন পেয়েছে বিরোধীরা।
এদিন সমবায়মন্ত্রীর কাছে এই রিপোর্ট পেশ করার পর জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান বলেন, মা মাটি মানুষের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমবায় সমিতিগুলির উন্নয়নে সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্যই সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলির ভোটে তৃণমূলের জয়জয়কার হয়েছে। এর থেকেই স্পষ্ট গ্রামীণ এলাকায় বিরোধীদের কোনও শক্তি নেই। গ্রামবাসীরা তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গেই রয়েছেন। বাকি সমিতিগুলির নির্বাচনেও তৃণমূলের জয় হবে। ছাব্বিশের নির্বাচনেও এর সুফল মিলবে জোড়া ফুলের।
রাজ্যের শিক্ষা,স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিদিন তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তা হলেও পদ্ম শিবির সংশ্লিষ্ট নির্বাচনগুলিতে তেমন ভেলকি দেখাতে পারেনি। এ ব্যাপারে পদ্ম শিবিরের নেতাদের একাংশ ঘুরিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতার কথা কার্যত কবুল করেছেন।
মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, সমবায় সমিতিগুলির নির্বাচনের সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি যোগ নেই। সেগুলির ভোট কোনও দলীয় প্রতীক চিহ্নে হয় না। কাজেই সেগুলির ফলাফল নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না আমরা। তবে সকলকে অন্ধকারে রেখে একতরফাভাবে সেগুলির নির্বাচন করছে ঘাসফুল শিবির। মানুষ এসব দেখছে। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে ওরা এর যোগ্য জবাব পাবে।