জয়েন্ট বিডিওর নাম করে প্রধান, উপ প্রধানকেই চাকরির ‘টোপ’, বেতন ২৫ হাজার! গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের
বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ। মালদহের গাজোলের জয়েন্ট বিডিও পরিচয় দিয়ে বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধিকে ফোন করে চাকরির টোপ দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
পুলিস সূত্রে খবর, গাজোল ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদ্যুৎ সর্দার এবং গাজোল ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অর্মিলা রাজবংশীকে দু’টি করে ক্যাজুয়াল কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়। সংশ্লিষ্ট প্রধান এবং উপপ্রধানের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানান অভিযুক্ত। নিয়োগ হওয়া কর্মীদের বেতন ২২ থেকে ২৬ হাজার টাকা হবে বলে ফোনে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি। ওই পঞ্চায়েতগুলি বুধবার অভিযুক্তের ফোন নম্বর দিয়ে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিস ও প্রশাসন খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
দুই গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার একটি অচেনা নম্বর থেকে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের কাছে ফোন যায়। ফোন করা ব্যক্তি জয়েন্ট বিডিও বলে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’জন ক্যাজুয়াল স্টাফ নিয়োগ করা হবে। একটি কম্পিউটার জানা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ, অন্যটি কৃষি দপ্তরে মাধ্যমিক পাশ একজনকে নেওয়া হবে। তাঁদের বেতন ২৬ হাজার এবং ২২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ফোন করা ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে নিয়োগ করতে চান বলে জানিয়েছিলেন। প্রথমেই সন্দেহ হয়েছিল প্রধান ও উপপ্রধানের। তাঁরা কালবিলম্ব না করে পুলিসের দ্বারস্থ হন।
গাজোল ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজেপির প্রদ্যুৎ কুমার সর্দার এবং গাজোল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির অর্মিলা রাজবংশী বলেন, এই ভুয়ো ফোন পেয়ে আমরা স্তম্ভিত। জানি না কোনও বড় প্রতারণার পরিকল্পনা করা হচ্ছে কি না।
কোথা থেকে আসছে এমন ফোন? কারা করছে? এই কাজ বড় কোনও প্রতারণা চক্রের বলেই মনে করছে পুলিস। আবারও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিরোধীদের চক্রান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন জনপ্রতিনিধিরা। সব দিক দিয়েই চিন্তিত বলে জানান তাঁরা। এদিন থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে, গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে ভালো হয় বলে জানিয়েছেন দু’জন।
গাজোলের জয়েন্ট বিডিও সুব্রত শ্যামল বলেন, কিছুদিন ধরে এমন হচ্ছে। এর আগে আমার নামে কেউ ফেক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। সেবার পুলিসকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মালদহ সাইবার ক্রাইম এবং গাজোল থানার পুলিস জানিয়েছে, ফোনের বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে।
তবে দুই জনপ্রতিনিধি বিরোধীদের চক্রান্ত বলে ইঙ্গিত করায় রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গাজোল মণ্ডল-২ এর সভাপতি নীহাররঞ্জন মণ্ডল বলেন, দুই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে বিরোধীরা চক্রান্ত করতে পারে বলে আমাদের ধারণা। জেলার শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হবে বিষয়টি।
পাল্টা গাজোল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীনেশ টুডুর মন্তব্য, গাজোলে বিজেপির কোনও ঠাঁই নেই। প্রচারে থাকতে ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।