মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণের ক্ষতিপূরণ দ্রুত মেটানোর আশ্বাস
বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের(এমটিপিএস) ছাইয়ের দূষণে বিস্তীর্ণ এলাকার জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে জট অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কেটে গেল। বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকে নিয়ে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বৈঠক করেন। জেলা প্রশাসনের ভবনে ওই বৈঠক হয়। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, গত দু’টি অর্থবর্ষে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১৪কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। এদিন বৈঠকে এমটিপিএস আধিকারিকরা ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এমটিপিএস কর্তৃপক্ষ প্রথমে জেলা প্রশাসনকে টাকা দেবে। আমরা ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের টাকা দিয়ে দেব।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চিফ জেনারেল ম্যানেজার প্রদ্যুম্নপ্রসাদ শাহ বলেন, দু’টি অর্থবর্ষের ক্ষতিপূরণ বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দেওয়া হবে।
ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়। তিনি এদিনের বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। বিধায়ক বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইয়ের দূষণে তিনফসলি জমি অনুর্বর হয়ে গিয়েছে। ওই সমস্ত জমিতে আর ফসল ফলে না। সেকারণে কয়েকবছর ধরে ডিভিসির আওতায় থাকা এমটিপিএস কর্তৃপক্ষ চাষিদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে আসছে। কিন্তু, দু’বছর ধরে সেই টাকা দেওয়া হচ্ছিল না। ফলে চাষিরা সংসার চালাতে পারছেন না। এর আগেও ছাইয়ের দূষণ নিয়ে আমি চাষিদের সঙ্গে আন্দোলন করেছি। এমটিপিএস কর্তৃপক্ষ কথা না রাখলে আমরা ফের আন্দোলনে নামব।
তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশে লটিয়াবনী ও নিত্যানন্দপুর অঞ্চলের বাঁকদহ, জামগাড়ি, হদলবনী, রাধাকৃষ্ণপুর সহ প্রায় ২০টি গ্রামের কয়েকশো বিঘা জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই জমিতে আর চাষ হয় না। ফলে এলাকার প্রায় চারহাজার চাষিকে ক্ষতিপূরণের টাকায় সংসার চালাতে হয়। টাকা দেওয়া অনিয়মিত হয়ে পড়লে ওই কৃষকদের পরিবারকে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। অবিলম্বে বকেয়া ক্ষতিপূরণ মেটানোর দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একাধিক গেট আটকে চাষিরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের পরিবারের লোকজনও গেটের সামনে অবস্থানে বসেন। গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিস এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এরপরই জেলা প্রশাসনের তরফে সমস্যা সমাধানে বৈঠক ডাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ক্ষোভের আঁচ পেয়ে এদিন বৈঠকে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাড়াতাড়ি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফলে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত হয়েছে। তবে চাষিরা জানান, প্রতিশ্রুতি পালন না করা হলে ফের আন্দোলন হবে।