• পটশিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছে ডেবরার বাঘাগেড়িয়া গ্রাম
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ডেবরা: ডেবরা ব্লকের গোলগ্রাম পঞ্চায়েতের বাঘাগেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা পটশিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছেন। ইদানীং এই গ্রামের বাসিন্দাদের তৈরি পটশিল্প বেশ নজর কাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাটির লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে(টাকা জমানোর ঘট) পটচিত্র এঁকে বাজার মাত করে দিচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। ডেবরার শিল্পীরা জানাচ্ছেন, এই গ্রামের উপর প্রচারের আলো না পড়ায় পর্যটক আসে না, বিক্রিবাটাও সেভাবে হয় না। তবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হওয়া বিভিন্ন ধরনের মেলা সেই অভাব খানিকটা হলেও পুষিয়ে দেয়। এবছরের শুরুর দিকে কলকাতায় হওয়া মেলায় ভালোই বিক্রি হয়েছে।

    গ্রামের পটশিল্পী মোহন চিত্রকর, মুস্তাফা চিত্রকর বলেন, বছরের পর বছর ধরে পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু প্রচারের আলোয় আসতে পারিনি। তাই বিক্রি কম। আমাদের প্রধান ভরসা হচ্ছে মেলা। ডেবরা ব্লকের এই পটশিল্প বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই। সরকারি সহযোগিতা পেলে খুবই উপকৃত হব।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেবরা থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে এই পটগ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দারা বংশপরম্পরায় পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিভা থাকলেও একসময় এই গ্রামের বাসিন্দারা আর্থিক ভাবে পিছিয়েছিলেন। বর্তমান সময়ে ছবিটা বদলেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হওয়া বিভিন্ন মেলায় গিয়ে লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে শিল্পীদের। জানা গিয়েছে, মেলায় এই গ্রামের বাসিন্দাদের হাতেই আঁকা দেবদেবীর ছবি, কাহিনি কিনতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় টিশার্ট, ওড়না থেকে শুরু করে শাড়িতে ফুটে ওঠে পটচিত্র। পাশাপাশি হাতপাখা, চায়ের কাপ থেকে জলের বোতল, সবেতেই এই শিল্পকলার ছাপ রাখছেন গ্রামবাসীরা।এক পটশিল্পী বলেন, জিনিসপত্রের দাম খুব বেড়ে গিয়েছে। তাও মানুষের সাধ্যের মধ্যে পটশিল্প বিক্রি করি। আশা করছি পিংলার মতো এখনকার পটশিল্পের খ্যাতিও ছড়িয়ে পড়বে। এই এলাকায় সবথেকে বেশি সমস্যা পানীয় জলের। এছাড়া বন্যা হলেই সমস্ত এলাকা জলের নীচে চলে যায়। সেই সময়ে শিল্পসৃষ্টি লাটে ওঠে।

    পটশিল্পী মর্জিনা চিত্রকর ও বাহারজান চিত্রকর বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাওয়ায় খুবই উপকার হচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে রং, তুলি কিনতে পারছি। তাই টাকা রাখার ঘটের উপর পটচিত্র আঁকছি। এইরকম ঘটের ভালোই বিক্রি আছে। আমরা চেষ্টা করি পটচিত্রের ডিজাইনে নতুনত্ব আনার। এই কাজ খুবই পরিশ্রমের। প্রচুর ধৈর্য্যের প্রয়োজন।তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ওঁদের হাতের কাজ দেখে সত্যি মুগ্ধ হই। এখনকার শিল্পকলার পরিচিতি বাড়লে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)