• ২০২৩ সালে দাহকাজ করেন মেয়েরা, ঝাড়খণ্ড থেকে ভিডিও কল মায়ের!
    বর্তমান | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কল্যাণী: ২০২৩ সালে স্বপ্না হালদার (৫৩) নিখোঁজ হয়েছিলেন। তারপর তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর আসে পরিবারের কাছে। দেহ উদ্ধার হয় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায়। লাশকাটা ঘর থেকে স্বপ্নাদেবীর তিন মেয়েকে এ কথা বলার পর মায়ের মুখ না দেখেই দাহকাজ করেন মেয়েরা। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও করেন। হঠাৎ দু’বছর পর খবর এল স্বপ্নাদেবী রীতিমতো জীবিত। আছেন একটি হোমে। সুস্থই আছেন। ভিডিও কলে মেয়েদের সঙ্গে কথাও বলেন। এবার মেয়েরা মাকে আনতে রওনা দিচ্ছেন ঝাড়খণ্ড। সেই পড়শি রাজ্যে একটি হোমে আপাতত রয়েছেন স্বপ্নাদেবী। মৃতা মাকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত তিন মেয়ে। ঘটনাটি চাকদহ থানার শিমুরালির শিবতলা এলাকার। 

    জানা গিয়েছে, স্বপ্নাদেবী আংশিক মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর তিন মেয়ে। স্বামী ১২ বছর আগে মারা গিয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি রানাঘাট থেকে এক মেয়ের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তারপর সেই মেয়ে চাকদা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন। কিছুদিন পর নোয়াপাড়া থানা এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে চাকদহ থানায় খবর দেয়। রাস্তার ধারে ঝোপের ভিতর একটি দেহ পচাগলা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে বলে জানায়। সেটি ক্ষতবিক্ষত। তবে ছবি দেখে মেয়েরা দেহটি মায়ের বলে চিনতে পারেন। ১৭ জুন বারাকপুর মর্গ থেকে দেহ নিয়েও আসেন। মর্গ জানায়, দেহটি ক্ষতবিক্ষত। মুখ দেখা যাবে না। এরপর মায়ের মুখ চাক্ষুষ না করে দাহকার্য এবং শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করেন মেয়েরা। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপ্নাদেবী বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কোনওভাবে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছন। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে পেয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোমে নিয়ে যায়। প্রথমদিকে স্বপ্নাদেবী কথা বলতে পারছিলেন না। হঠাৎ দিনকয়েক আগে নিজের বাড়ির ঠিকানা চাকদহ বলে জানান। এরপর হোম চাকদহ থানায় যোগাযোগ করে। চাকদহ পুলিস মেয়েদের খোঁজ করে খবর দেন। পুলিস জানায়, স্বপ্নাদেবী জীবিত। এখন ঝাড়খণ্ডের ঘামারিয়া থানা এলাকার একটি হোমে রয়েছেন। হোমে যোগাযোগ করেন স্বপ্নাদেবীর কন্যারা। ভিডিও কলে মাকে দেখতেও পান। মেয়েদের সঙ্গে কথাও হয় মায়ের। পরস্পরকে চিনতে পারে সবাই। এবার মাকে আনতে ঝাড়খণ্ড যাচ্ছে পরিবার। স্বপ্নার বড় মেয়ে শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী বলেন, ‘এভাবে মাকে ফিরে পাব ভাবতেই পারিনি। দাহ করার পর শ্মশান শংসাপত্র দিয়েছিল। সেটি রয়েছে। তবে এখন জানতে 

    পারলাম মা সুস্থ আছেন। তাঁকে আনতে যাচ্ছি আমরা।’
  • Link to this news (বর্তমান)