• 'যে হাতে কলম ধরেছি, সেই হাতে বোমা ধরতে বেশি সময় লাগবে না...'
    এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • 'যে হাতে আমরা এতদিন কলম ধরেছি, সেই হাতে বোমা ধরতেও আমাদের সময় লাগবে না । আমাদের আর হারানোর কিছু নেই।' কার্যত সিউড়িতে এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি শোনা গেল চাকরিহারাদের গলায়। শুধু তাই নয়, টার্মিনেশন লেটার নিয়েও চরমতম হুমকি শিক্ষকমহলের। বুধবারের বিক্ষোভ থেকে শিক্ষককেরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন চাকরি ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের পথ থেকে তাঁরা সরবেন না।

    এদিন জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকেরা। ডিআই অফিসে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল এসএসসি-এর চাকরিহারা শিক্ষকদের। সেখানে বার বার সিস্টেমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো যোগ্য শিক্ষককেরা। বুধবার বীরভূম জেলার কয়েকশো চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচির আয়োজন করেন । মাঠ থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রথমে বাসস্ট্যান্ডের সামনে আগুন জ্বালিয়ে সিউড়ির রাজপথ অবরোধ করেন। পরে সেখান থেকে আবার মিছিল করে গিয়ে ডিআই অফিস ঘেরাও করেন । ডি আই অফিসের গেটে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখান তারা । সঙ্গে চলতে থাকে স্লোগানিং।

    প্রশাসনের উদ্দেশে চাকরিহারানো বিশ্বজিৎ, সুবীরদের বার্তা, ‘আমাদের আর হারানোর কিছু নেই। আমরা এখন জীবন্ত লাশ। আর যদি আমাদের স্কুলে যাওয়ার পথ আটকানো হয়। যদি টার্মিনেশন লেটার ধরানো হয়। তাহলে ডেথ সার্টিফিকেটটা আমরাই বানিয়ে নেব। টেন্ডার বা সিস্টেমের ভুল তো আমরা দেখতে যাব না। আমরা ১৯ হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থী। আমাদের চাকরি কাড়া চলবে না।’

    রাজনগরের চাকরিহারা শিক্ষিকা অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। সুপ্রিম নির্দেশের পর থেকে তিনি আর যাচ্ছেন না স্কুলে । তার ছোট্ট সন্তান তাকে প্রশ্ন করছে,"মা তুমি স্কুল যাচ্ছনা কেন? তোমার স্কুল কী ছুটি ?" সন্তানের উত্তরে তিনি বলতে পারছেন না চাকরী টা আর নেই ।

    এদিনের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ধুলিয়ান ডিগ্রী হাই স্কুলের শিক্ষক মিতেশ সাও। তিনি চাকরি পেয়েছিলেন ঝাড়খন্ডে শিক্ষকতা করার, কিন্তু দুটি চাকরির মধ্যে বেছে নেন বঙ্গের এসএসসি-কেই। বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার টাকারও বেশি দিতে হয় ই এম আই এ । স্বাভাবিকভাবে সুপ্রিম নির্দেশে মাথায় বাজ পড়েছে মিতেশ-সহ ২৬ হাজার শিক্ষকের।

  • Link to this news (এই সময়)