রাজ্যে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের মধ্যে সুখবর। স্কুল স্তরে ১২৪০ জন শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগপত্র পেতে চলেছেন।
রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২০২২ সালের সিদ্ধান্তমতো সুপার নিউমেরারি পদ তৈরির ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত বাতিলে মঙ্গলবারই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ। তার পরেই বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) শারীর ও কর্মশিক্ষা পদে ১২৪০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের সুপারিশপত্র পাঠাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদে।
রাজ্যে শিক্ষক–শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির মাঝেই ২০২২ সালে মে’র শুরুতে মোট ৬,৮৬১টি সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল। স্কুলশিক্ষা দপ্তর ২০২২ সালের ১৯ মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন স্তরের সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগের কথা জানিয়েছিল।
যদিও সর্বোচ্চ আদালত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী পদে ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিতে বলে। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ আদালতের মামলা করে। তাঁদের দাবি, ছিল অযোগ্যদের নিয়োগের রাস্তা করে দিতেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে।
গত বছরের ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ একদল চাকরিপ্রার্থীর আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপার নিউমেরারি পদ তৈরিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এমনকী প্রয়োজনে সিবিআই তাঁদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে জানায়। যদিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে। এরপরই নড়েচড়ে বসল এসএসসি এবং পর্ষদ।
বিকাশ ভবনের কর্তারা বলছেন, সংশ্লিষ্ট শারীর ও কর্মশিক্ষার শিক্ষকদের স্কুলে নিয়োগের জন্য কাউন্সেলিং করে সুপারিশপত্র আগেই দেওয়া হয়েছে। এসএসসি–র ২০১৬ সালের শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা প্যানেলে নাম থাকা এই ১২৪০ জন প্রার্থীকে অনুমোদনপত্র দেওয়া হয়েছে আগেই। সুপার নিউমেরারি পদ তৈরি বেআইনি বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানায়নি। ফলে কমিশনের এ বার পর্ষদকে চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশপত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে এখন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ সেখানে এই সংক্রান্ত মামলা ঝুলছে।
স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘এসএসসি পর্ষদের কাছে সংশ্লিষ্টদের সুপারিশপত্র না পাঠালে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার প্রার্থীরা আবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারতেন। এখন সেই আশঙ্কা কাটল। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতেই বলা হয়েছে, এই পদে নিয়োগে অনুমোদন দেওয়া হলেও তারা কলকাতা হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করবে।