এই সময়: ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হওয়ায় মেদিনীপুরের এক আদীবাসী তরুণী–সহ চার কলেজ ছাত্রীকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মহিলা পুলিশের নৃশংস মারধরের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজ্যে। অথচ এ সংক্রান্ত মামলা এগোচ্ছে না হাইকোর্টে। এ জন্য রাজ্যের উদাসীনতার দিকেই আঙুল উঠছে। রাজ্যের তরফে মামলা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার ফের আবেদন করা হয়েছিল। তা নিয়ে বিস্তর বাক–বিতণ্ডাও হয় হাইকোর্টের এজলাসে। তার পরে বুধবারের নির্ধারিত শুনানিও হলো না! রাজ্যের তরফে স্বয়ং অ্যাডভোকেট জেনারেল বার বার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করায় বিষয়টিকে দৃষ্টিকটু বলেই মনে করছেন মামলাকারী। হতাশ হাইকোর্টও।
১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নিগ্রহের প্রতিবাদে মেদিনীপুর কলেজের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন সেখান থেকে এআইডিএসও সমর্থক সুশ্রীতা সরেন–সহ চার ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মেদিনীপুর মহিলা থানায় দীর্ঘ সময় ধরে অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হাইকোর্টও।
এ সংক্রান্ত মামলায় দিনের পর দিন রাজ্যের তরফে এজি শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষও। মঙ্গলবার ফের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সময় চাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মামলাকারীর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ১২ মার্চ থেকে এই মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। এজি স্বয়ং বার বার সময় চাওয়ায় বিচার এগোচ্ছে না।
তাঁর এই অভিযোগ শুনে গলা চড়ান এজলাসে হাজির রাজ্যের প্যানেলের আইনজীবীরা। এজি–ও বলেন, তিনি সময় চেয়ে গসিপ করতে ব্যস্ত থাকেন না। তিনি এই মামলা আর লড়বেন না বলেও মন্তব্য করেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি এ ধরনের নাটকীয় পরিবেশে অভ্যস্ত নন। এজলাসের মধ্যেই তুমুল বাক–বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষের আইনজীবীরা। যদিও পরে বিচারপতির মধ্যস্থতায় বিষয়টি থামে।
পরবর্তী শুনানি বুধবার হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু এক বিচারপতির মৃত্যুতে এ দিন সকাল থেকেই কোনও এক পক্ষের আইনজীবী হাজির না থাকলে শুনানি না করতে আদালতকে অনুরোধ করা হয়েছিল বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে। ফলে এ দিনও আর হয়নি এই শুনানি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের যথেষ্ট সারবত্তা রয়েছে, একজন আদিবাসী তরুণীর সেই মামলায় কেন যেনতেনপ্রকারেণ মামলা পিছোনোর চেষ্টা? আজ, বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হয় কিনা, এখন সে দিকে তাকিয়ে সব পক্ষই।