• কর্মহারাদের আন্দোলনে আগুন জ্বলল কৃষ্ণনগরে
    এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: কলকাতার কসবায় যখন পুলিশের সঙ্গে চাকরিহারাদের গোলমালে তুমুল উত্তেজনা, তখন অনেকটা একই চিত্র কৃষ্ণনগরে।

    এ দিন সেখানে ডিআই অফিস অভিযান করে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। তাদের কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার বেধে যায়। বিশাল ব্যারিকেড ঠেলে এগোতে গেলে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয় মঞ্চের সদস্যদের। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস ক্যাম্পাসে ঢুকে দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

    পাশাপাশি, পুরোনো ফ্লেক্স–ফেস্টুন–কাঠ জড়ো করে অফিস চত্বরেই আগুন ধরিয়ে দেখানো হয় বিক্ষোভ। চালানো হয় ভাঙচুরও। আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে অফিস ক্যাম্পাসে পুলিশি ঘেরাটোপে কিছুক্ষণ আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডিআই (সেকেন্ডারি)। তাতে অবশ্য সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিক্ষুব্ধরা। দুপুর তিনটে পর্যন্ত ডিআই অফিস ক্যাম্পাসে আন্দোলনের পর বিকেলে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বসে পড়েন তাঁরা। তার আগে, এ দিন সকালে সদর হাসপাতাল মোড়ে টায়ার জ্বালিয়েও বিক্ষোভ দেখানো হয়।

    আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা ফ্লেক্সে লেখা ছিল — যোগ্যদের সসম্মানে স্কুলে ফেরাতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির সম্পূর্ণ দায় প্রতিষ্ঠান ও তার আধিকারিকদের নিতে হবে। ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। এঁদের তরফে চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘এসএসসি–র ওই ওএমআর শিটগুলির মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে এসএসসি–কে যোগ্য–অযোগ্যদের পৃথক ভাবে সার্টিফাই করে ওয়েবসাইট ও একাধিক সংবাদপত্রে প্রকাশ করতে হবে। যোগ্যতা প্রমাণের জন্য আমরা নতুন করে কোনও পরীক্ষায় বসতে রাজি নই।’

    তাঁদের বক্তব্য, আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি পথে নেমেও চলবে আন্দোলন। সমাজের নানাস্তরের মানুষের কাছে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানান এঁরা। আন্দোলনকারী এক চাকরিহারা শিক্ষিকা বলেন, ‘যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরিতে ঢোকার পরেও আমাদের গায়ে অযোগ্য তকমা লাগানো হয়েছে! দাবি না মিটলে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাব।’

    এ দিন সাড়ে ১১টা নাগাদ কৃষ্ণনগরের সদর হাসপাতাল মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে সাড়ে ১২টার মধ্যে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের সামনে পৌঁছন মঞ্চের সদস্যরা। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাঁদের। এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের একাংশকে পাশের গলি দিয়ে ডিআই অফিসের পাঁচিলের ভাঙা অংশ দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেখা যায়। এরই মধ্যে খবর মেলে যে, কসবায় এই আন্দোলনের এক শিক্ষক–নেতা পুলিশের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে ১২ জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়।

  • Link to this news (এই সময়)