• খুলল স্কুলের বেতন-পোর্টাল, ‘বাতিল’ ২৬ হাজারেরও নাম তালিকায়, তাৎক্ষণিক স্বস্তি পেলেও সন্দিগ্ধ চাকরিহারারা
    আনন্দবাজার | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • খুলে গেল স্কুলগুলির বেতন পোর্টাল। এবং সেখানে নাম রয়েছে ‘সবার’। গত বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রায় ২৬ হাজার (সম্ভবত ২৫,৭৩৫) চাকরি বাতিলের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। এরই মাঝে স্কুলগুলির বেতন পোর্টাল বন্ধ থাকাতে উদ্বিগ্ন ছিলেন শিক্ষকমহলের কমবেশি সকলেই।

    স্কুলগুলি জানাচ্ছে আগের মাসে যা নাম ছিল, বেতন পোর্টালে সেই তালিকা অপরিবর্তিতই রয়েছে। অর্থাৎ সেখানে রয়েছে বাতিল হওয়া ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর নামও। চাকরিহারাদের আশঙ্কা ছিল যে তাঁদের নাম থাকবে না এই তালিকায়। তবে, নাম থাকলেও চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না তাঁরা। পোর্টালে নাম থাকলেই কি তাঁরা বেতন পাবেন? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

    বেতন পোর্টালে শিক্ষকদের বেতন আপডেট করতে হয় প্রতি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে। প্রধান শিক্ষকদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, ওই পোর্টালে কোনও শিক্ষকের নাম সংযোজন করা বা বাদ দেওয়ার অধিকার তাঁদের নেই। কোনও শিক্ষকের যদি আয়কর বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে কিছু পরিবর্তন থাকে, সেই পরিবর্তনটুকু তাঁরা লিখতে পারেন।

    ইতিমধ্যেই চাকরিহারাদের বেতন যাতে দেওয়া হয় তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে, এখন‌ও আশঙ্কামুক্ত নন চাকরিহারা ‘যোগ্য’রা। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ সপ্তাহের মধ্যেই তিনি চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

    যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের আহ্বায়ক মেহবুব মণ্ডল বলেন, “সরকার নাম বাদ দেয়নি, সেটি ভাল খবর। পাশাপাশি, কোন‌ও সংশোধনী বা সরকারি নির্দেশ ছাড়া বেতনের একটি আশঙ্কাও থাকছে। পরে আদালত সুদসমেত টাকা ফেরত দিতে বললে তখন আমরা কী করব?”

    বুধবার সকাল থেকে চাকরি ফেরানোর দাবিতে অনেক জেলায় স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক (ডিআই) দফতর অভিযান করেন চাকরিহারারা। কিছু জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বা ধস্তাধস্তিও হয়। কলকাতায় কসবার ডিআই অফিসে অভিযানকারী শিক্ষক এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে লাথি মারার অভিযোগও উঠেছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেছেন, লাথি মারার ঘটনা ‘কাম্য নয়’। তবে কমিশনার এও বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পরই পুলিশ ‘হালকা বলপ্রয়োগ’ করেছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ শিক্ষকদের শান্ত হতে পরামর্শ দিয়ে জানিয়েছেন, কোনও নাগরিক হাতে আইন তুলে নিলে পুলিশ নীরব থাকতে পারে না। তবে অভিযানকারী শিক্ষকদের অনেকেই বলছেন, পুলিশ ‘বিনা প্ররোচনায়’ লাঠি চালিয়েছিল।

    বুধবার রাতে স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনে বসে থাকতে দেখা গেল চাকরিহারাদের কয়েক জনকে। তাঁদের দাবি, মিরর ইমেজ় প্রকাশ না করা পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।

    ফের বৃহস্পতিবার রাজপথে মিছিল করবেন চাকরিহারাদের একাংশ। ‌শিয়ালদহ থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত হবে মিছিল। শুক্রবার এসএসসি অভিযানের ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা। শুক্রবার স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনে অবস্থান করবেন। সেখান থেকেই শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা দফতরের বৈঠকে যাবেন বলে অনেকে বলছেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)