• তৃতীয় কোনও দেশে রফতানির জন্য বাংলাদেশ আর ব্যবহার করতে পারবে না ভারতের শুল্ককেন্দ্র!
    আনন্দবাজার | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • তৃতীয় কোনও দেশে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি করতে ব্যবহার করা যাবে না ভারতের কোনও বন্দর বা বিমানবন্দরের শুল্ককেন্দ্র। সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। কেন্দ্রীয় অপ্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (সিবিআইসি)-এর ওই বিজ্ঞপ্তিতে রফতানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছে। এর ফলে ভারতীয় ভূখণ্ডের কোনও বন্দর এবং বিমানবন্দরের শুল্ক অফিস ব্যবহার করে তৃতীয় কোনও দেশে পণ্য রফতানি করতে পারবে না বাংলাদেশ।

    সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পড়শি দেশকে এই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছিল ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলি। বিশেষ করে বস্ত্র রফতানি সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে এই অনুরোধ করা হয়েছিল। ২০২০ সালের জুন মাস থেকে বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়ে আসছিল ভারত। মূলত ভুটান, নেপাল, মায়ানমারে পণ্য রফতানির জন্য এই সুবিধা ব্যবহার করত বাংলাদেশ। ৮ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সংক্রান্ত পূর্ববর্তী নির্দেশিকা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তবে যে সব পণ্য ইতিমধ্যে ভারতে প্রবেশ করেছে, সেগুলিকে পূর্বের নির্দেশিকা অনুসারে ভারত থেকে বেরোতে দেওয়া হবে।

    বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়ার ফলে এ দেশের বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলিতে ভিড় বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এর ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলির রফতানিতে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে এর জন্য ভারতের মাটি হয়ে নেপাল এবং ভূটানে পণ্য রফতানি করতে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না।

    ঘটনাচক্রে, আমেরিকার শুল্কনীতি ঘিরে যখন গোটা বিশ্ব বাণিজ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশি পণ্য রফতানির বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নিল নয়াদিল্লি। পিটিআই জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে বস্ত্র, জুতো, মূল্যবান পাথর এবং গহনা ক্ষেত্রে ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলির সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, বস্ত্র রফতানি ক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হল বাংলাদেশ।

    ভারতীয় রফতানি সংস্থাগুলির সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজ়েশন’ (এফআইইও)-এর মহাপরিচালক অজয় সহায় বলেন, “এর ফলে ভারতীয় রফতানি পণ্যের জন্য বিমানে আরও বেশি জায়গা পাওয়া যাবে। অতীতে রফতানিকারক সংস্থাগুলি প্রায়শই অভিযোগ করত, বাংলাদেশি পণ্যের জন্য তারা কম জায়গা পাচ্ছে।” বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করার জন্য অতীতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছিল বস্ত্র রফতানি সংস্থাগুলির সংগঠন ‘অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল’। সংগঠনের সভাপতি সুধীর সেখরির বক্তব্য, প্রায় প্রতি দিনই ২০-৩০টি (বাংলাদেশি) পণ্যবোঝাই ট্রাক দিল্লিতে আসে। এর ফলে প্রক্রিয়া কিছুটা শ্লথ হয়ে যায় এবং উড়ান সংস্থাগুলিও এর সুবিধা নেয়। কখনও কখনও পণ্য রফতানির জন্য বিমানের ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)