চাকরি ফেরানোর দাবিতে এসএসসি ভবনের সামনে রাতভর অবস্থানে শামিল চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবিতে সরব তাঁরা। বুধবার রাতে অবস্থানস্থলে যান বিজেপি সাংসদ তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার শিয়ালদা থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা। শুক্রবার এসএসসি অভিযানের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসি-র সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। যার জেরে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের একাংশের সঙ্গে সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগ্যদের চাকরির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যাঁরা যোগ্য, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সুপ্রিম কোর্টের আইন অনুযায়ীই করব। পথে চলতে গেলে গর্ত আসতে পারে, কিছু রাস্তা ভাঙা থাকতে পারেন, সেই সব পেরিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আমার প্ল্যান এ রেডি, বি রেডি, সি রেডি, ডি রেডি, ই রেডি। এই যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি যাতে কোনও ভাবে না যায়, তার ব্যবস্থা আমরা করব। আপনি আপনার কাজ করুন। আপনাকে কেউ চাকরি থেকে বরখাস্ত করেনি।
অন্য দিকে, চাকরি বাতিল নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, '২৬ হাজার চাকরি যাওয়ার জন্য যদি কেউ দায়ী হয়ে থাকেন, তা মুখ্যমন্ত্রী। এসএসসির অটোনমি শেষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদেরও বলি করা হয়েছে।'
চাকরিহারাদের বিক্ষোভ ঘিরে বুধবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দক্ষিণ কলকাতার কসবা। বুধবার কসবায় ডিআই অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন চাকরিহারারা। সেই সময়ই পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি বাধে। পরিস্থিতি সামলাতে চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। টেনেহিঁচড়ে সরানো হয় চাকরিহারাদের। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাকরিহারারা। ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে মালদাতেও। শিক্ষিকাদের উপরও লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ন্যায়বিচার দিতেই হবে, এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারারা। শুধু কলকাতা নয়, এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও চাকরিহারাদের বিক্ষোভের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তেজনা ছড়ায় মালদাতেও। সেখানে ডিআই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি বাধে চাকরিহারাদের।