• কেন রাজভবনে আটকে একের পর এক বিল? বিবৃতি দিয়ে এবার সব জানাল রাজভবন‌
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • মাসের পর মাস কেটে গিয়েছে। তারপরও রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল আটকে রেখে দেওয়া হয়েছে রাজভবনে। এই অভিযোগে রাজ্যপাল এবং রাজভবনকে অভিযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তামিলনাড়ু সরকার। সেই মামলায় এম কে স্ট্যালিনের সরকারের জয় হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রেও বিল আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টের রায় এক্ষেত্রেও অত্যন্ত প্রযোজ্য। কারণ রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালদের ঝুলিয়ে রাখা বৈধ নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তারপরই বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তাঁর কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একদিন পর পাল্টা জবাব এল রাজভবন থেকে। বুধবার রাতে দু’টি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে রাজভবন।

    এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে হাতিয়ার করে বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উপর চাপ বাড়ালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যপালকে স্মরণ করিয়ে দিলেন, বাংলায়ও অন্তত ২৩টি বিল বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়ার পরও রাজ্যপালের অনুমোদন পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজভবনে পড়ে আছে। এই বিষয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌যদি রাজ্যপালের মনে হয় বিলগুলিতে কোনও সমস্যা আছে, তাহলে তো তিনি রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ নিতে পারেন। রাজ্যপালের এই বিষয়ে আরও একটু নজর দেওয়া উচিত।’‌ তবে রাজভবন যে বিবৃতি দিয়েছে সেখানে স্পিকার বা রাজ্য সরকারের কোনও কথা উল্লেখ করা নেই। বরং সংবাদমাধ্যমের খবরের জেরেই রাজভবন থেকে আটকে থাকা বিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হচ্ছে সেটা জানানো হয়েছে।


    অন্যদিকে রাজভবনের জবাব, রাজ্যপাল সংবিধান মেনে চলেছেন। বিশেষ করে বিল পাশের বিষয়ে। ২০২৩ সালে রাজভবনকে জানানো হয়েছিল ২২টি বিল নাকি রাজভবনে আটকে আছে। এই সংবাদ সম্প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যপাল সবটা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই বিলগুলির মধ্যে পাঁচটিতে ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল সায় দিয়েছেন। আরও দু’টি বিলে অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে রাজ্যপাল মোট ১১টি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন।

    এছাড়া ইতিমধ্যেই একঝাঁক বিলে সম্মতি দিতে এখন রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কিছু তথ্য তলব করেছে রাজভবন। আর ওইসব বিলের উপযুক্ত তথ্য রাজভবন পায়নি। সেটা নবান্নকে উদ্দেশ্য করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও বিলের জন্য রাজ্য সরকারকে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী বা সচিবদের রাজভবনের সঙ্গে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। নাম না করে এভাবেই বিবৃতি দিয়েছে রাজভবন। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‌সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থার জন্য। এই রায়কে মান্যতা দিতে হবে। অন্য কোনও রাজ্যের এটার জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যাঁরা রাজ্যপাল হবেন, তাঁদের যদি সামান্যতম বোধবুদ্ধি থাকে, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মর্যাদা দেবেন। কেউ যদি সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মর্যাদা না দেন, তাহলে বুঝতে হবে তাঁরা রাজ্যপাল হওয়ার যোগ্যই নন।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)