টাকা আদায় করতে মৃতদেহ আটকে রাখা আইনসম্মত নয়। বেসরকারি নার্সিংহোম এবং হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশনের অষ্টম রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত থেকে তিনি বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করেছেন। স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাসপাতালের বিলের টাকা আদায়ের জন্য কোনো রোগীর মৃতদেহ আটকে রাখা যাবে না। দেহ ছেড়ে দেওয়ার পরও যদি রোগীরা টাকা দেওয়া নিয়ে কোনোরূপ সমস্যা করে, সেক্ষেত্রে কিভাবে রোগীদের পরিবার থেকে টাকা আদায় করতে হবে তা নিয়ে অন্য আইন তৈরির চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য কমিশন।
মৃতদেহ আটকে রাখার বিষয় ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বার্তা দিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ এসেছে প্রশিক্ষিত নার্স, আরএমও ছাড়াই হাসপাতালগুলি পরিষেবা প্রদান করছে। হাসপাতালে প্রশিক্ষিত নার্স, আরএমও থাকা আবশ্যক। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে বেআইনি টাকা উপার্জন করা বন্ধ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে এমন এক আইন আছে যা দেশের আর কোথাও নেই। সেটি হল ক্লিনিক্যাল এসট্যাবলিসমেন্ট অ্যাক্ট। ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই আইনটি এনেছিল।
এই আইনের অধীনে স্বশাসিত সংস্থা ক্লিনিক্যাল এসট্যাবলিসমেন্ট কমিশন তৈরি হয়েছে। বেসরকারি সেক্টরের সাত আট হাজার হাসপাতাল ও নার্সিংহোম এই কমিশনে রয়েছে। এই নির্দিষ্ট আইন তৈরির উদ্দেশ্য রোগী এবং হাসপাতাল সবার স্বার্থরক্ষা করা। এই আইন অনুযায়ী কেবল রোগীদের কথা শোনা হয় তা নয়, হাসপাতালের সমস্যাগুলিও নজরে রাখা হয়। এখানের অ্যাসোসিয়েশনে ছোট নার্সিংহোমগুলি থাকলেও কর্পোরেট হাসপাতালগুলি নেই। তবে এদিনের সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে টাকা আদায়ের জন্য মৃতদেহ আটকে রাখার বিষয়ের উপর। চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ডাক্তারবাবু রোগীকে ছেড়ে দিলে কোনো হাসপাতলের অধিকার নেই সেই রোগীকে আটকে রাখার। একইভাবে মৃতদেহ আটকানোর অধিকারও নেই। তবে রোগীরা টাকা না দিলে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা দেখা হচ্ছে।