• সময় মানছে না তাম্রলিপ্ত-কান্ডারি এক্সপ্রেস, নিত্য হয়রানি দিঘার পর্যটকদের
    প্রতিদিন | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: সকালে তার নাম তাম্রলিপ্ত। আর দুপুরে কান্ডারি। আর এই কান্ডারির কাণ্ডকারখানায় দিঘা সফরই আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যটকদের। তিন ঘণ্টার যাত্রাপথ, অথচ রোজ সেই পথই অতিক্রম করতে লেগে যাচ্ছে ছ’ঘণ্টার বেশি। সোম আর বৃহস্পতিতে তো আরও বেশি। রোজই দু’বেলা করে ট্রেন ছাড়ছে গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরিতে। ফলে একদিকে যেমন যাত্রীদের রোজ ভোরবেলা হাওড়া স্টেশনে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, তেমনই গন্তব্যেও পৌঁছচ্ছেন ততোধিক দেরিতে। আবার দিঘা থেকে রাতের ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় হাওড়ায় পৌঁছতে রোজই মধ্যরাত হয়ে যাচ্ছে যাত্রীদের। ফলে বাড়ি ফিরতে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। 

    যাত্রীদের বক্তব্য, দু’একদিন ট্রেন লেট হতে পারে। কিন্তু রোজ কী করে একটা ট্রেন চারবেলা লেটে চলে! কেন রেল কর্তৃপক্ষ এটা দেখে না! শুধু ট্রেন দেরিতে চলছে, সেই মেসেজ পাঠিয়ে দেয় ফোনে। তাতেই দায় শেষ। এক যাত্রীর কথায়, সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়া প্রথম ট্রেনের ক্ষেত্রে সবথেকে সমস্যা। ভোররাতে মেসেজ আসে। অথচ সকাল সাতটার আগে যেহেতু ট্রেন, তাই বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেক ভোরেই মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। স্টেশনে এসে তাঁদের অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকে না।

    চলতি মাসের শেষে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হতে চলেছে। তারপর সেখানে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে। কিন্তু ট্রেন বলতে ওই একটি। দু’বেলা করে যাতায়াত করে। সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের ট্রেনটি প্রায় রোজই দু’ তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ফলে পৌঁছয়ও দেরিতে। সেটিই আবার ফেরে। আবার দুপুরে কান্ডারি নাম হয়ে সেই ট্রেনটি যায় দিঘা। সেখান থেকে শেষ ট্রেনটি ছাড়ার কথা রাত ৭টা ২০ মিনিটে। আগে যা ছাড়ত ৬টা ২০ মিনিটে। অথচ প্রায় রোজই রাত ন’টার আগে তা ছাড়ে না। তারপর মাঝপথে তো দাঁড়িয়ে যাওয়া রয়েইছে। ট্রেন হাওড়া স্টেশনে ঢুকতে রাত দু’টো হয়ে যায়। কোনওদিন আরও বেশি।

    ট্রেনেরই এক কর্মী জানান, সোম আর বৃহস্পতিবার ট্রেনটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সাঁতরাগাছি কারশেডে যায়। ওইদিন ট্রেনটি এতটাই দেরি করে যে রাতের ট্রেন দিঘা থেকে ছাড়তেই ১১টা হয়ে যায়। ফিরতে ভোর। ফলে পর্যটকদের চূড়ান্ত হয়রানি হতে হচ্ছে নিত্যদিন। যাত্রীদের কথায়, ট্রেনটির কতদূর রক্ষণাবেক্ষণ হয়, তারও সন্দেহ আছে। রেলের এক আধিকারিক জানান, আগে রোজই ট্রেনটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেত। কিন্তু এখন অন্যান্য ট্রেনের সংখ্যা এতই বেড়েছে যে সপ্তাহে দু’দিন কারশেডে যায়। ট্রেন বাড়লেও কর্মীসংখ্যা বাড়েনি। ফলে ট্রেন কারশেডে গিয়েও দাঁড়িয়ে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরন বলেন, একটিই ট্রেন দুটি নামে চারবেলা যাতায়াত করে। একবার লেট হলেই পরের ট্রিপগুলোও লেট হয়ে যায়। সেটাই হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)