এই সময়, পুরুলিয়া: দর্শকমহলে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল বলিউডের সিনেমা ‘স্পেশ্যাল ২৬’। বুধবার যেন সেই সিনেমারই পুনরাবৃত্তি হলো ঝালদার বামনিয়া গ্রামের এক বিড়ি ব্যবসায়ীর বাড়িতে। আয়কর দপ্তরের তল্লাশির নামে লুট হয়ে গেল নগদ সাড়ে সাত লক্ষ টাকা ও বিপুল পরিমাণ গয়না। তার পরে ওই ব্যবসায়ীর স্করপিও গাড়ি চালিয়েই আট জনের দলটি চম্পট দেয় ঝাড়খণ্ডের দিকে।
সেখানেই শেষ নয়, লুট করে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা আয়কর দপ্তরের ফেক নোটিসও ধরিয়ে দিয়ে যায়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঝাড়খণ্ড সমেত বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার সন্ধেয় এমনই এক চাঞ্চল্যকর লুটের ঘটনায় উদ্বেগে ব্যবসায়ী মহল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে ধরা যায়নি। রুদ্ধশ্বাস সেই ঘটনা নিয়ে বিড়ি ব্যবসায়ী কিরীটী মাহাতো বলেন, ‘বোলেরো এবং আরও দু’টি গাড়িতে চেপে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ কয়েক জন লোক আসে। তাদের মধ্যে এক মহিলা–সহ সাত জন ঘরে ঢুকে নিজেদের আয়কর বিভাগের আধিকারিক বলে পরিচয় দেয়। তার পরেই ঘরের সমস্ত বাক্স এবং সিন্দুক খোলার নির্দেশ দেয়। ওই দলটিকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িগুলি চলে গিয়েছিল। এর পরে তারা হাতুড়ি–সহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি বের করে তালা ভেঙে যাবতীয় দামী জিনিসপত্র তুলে নিতে থাকে।’
ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘আমি বাধা দিতে গেলে তারা বলে, এ ভাবে কাজে বিঘ্ন ঘটালে আইনি সমস্যায় পড়তে হতে পারে। ফলে পরিবারের সদস্যরা ভয়ে চুপ করে যায়। প্রচুর টাকার অলঙ্কার এবং নগদ প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ নগদ টাকা ওরা নিয়ে বেরিয়ে যায়।’
পরিবারের সদস্য চিন্তাবালা কুমার বলেন, ‘যা সোনাদানা বাড়িতে ছিল, সব নিয়ে ওরা চলে যায়। বাড়িতে থাকা খাতাপত্র তছনছ করে ওই আটজনের দল। সব কাজ হয়ে যাওয়ার পরে তারা একটি চিঠি দিয়ে যায়। জানায়, আইনি পথে এই সব জিনিসপত্র ফিরে পাওয়া যাবে।’
ওই দলটির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ছিল রোমাঞ্চকর। ব্যবসায়ীর স্করপিও গাড়িটি তারা নেয়। চালককে বলে গাড়ি চালাতে। ঘটনার পরে বেশ কিছুক্ষণ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পুলিশ কোনও খোঁজখবর না–নেওয়ায় সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। থানার সঙ্গে কথা বলে ওই ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন, তাঁর বাড়ি থেকে টাকা এবং গয়না লুট করা হয়েছে নাটকীয় কায়দায়।