অবৈধভাবে দখল! দ্রুত ছাড়তে হবে খড়গপুরের বাংলো, দিলীপ ঘোষকে কড়া নোটিস রেলের
প্রতিদিন | ১০ এপ্রিল ২০২৫
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: অবৈধভাবে রেলের বাংলো দখল করে বসবাস করছেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ! এই অভিযোগে এলাকা সরগরম হতেই পদক্ষেপ নিল রেল। খড়গপুর ডিভিশনের এস্টেট অফিস অ্যান্ড কোর্টের তরফে একটি নোটিস দেওয়া হল তাঁর বাংলোয়। অবিলম্বে ওই বাংলো খালি করে দিতে হবে বলে উল্লেখ রয়েছে নোটিস। বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বাংলোটি দখল করে রয়েছেন প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটির প্রাক্তন সদস্য তুষারকান্তি ঘোষের বন্ধু দিলীপ ঘোষ।
খড়গপুর শহরের সাউথ সাইড এলাকায় রেলের ৬৭৭ নং বাংলো। মেদিনীপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে এই বাংলোটিই জবরদখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ বছর ধরে দিলীপ ঘোষ তা দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। তবে এর জন্য খড়্গপুর ডিভিশনের প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটির প্রাক্তন সদস্য তুষারকান্তি ঘোষকেই দায়ী করা হয়েছে। অভিযোগ, ২০২০ সালের মার্চ মাসেই ওই বাংলোয় তুষারবাবুর থাকার মেয়াদ শেষ হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলোয় থাকেন তাঁর বন্ধু দিলীপ ঘোষ। কোনও ভাড়াও দেননি তিনি। সেই কারণে এবার বাংলো খালি করে দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হল।
দিলীপ ঘোষের দাবি, ২০১৭ সাল থেকে তিনি ওই বাংলোয় থাকেন। বন্ধু তুষারকান্তি ঘোষ তাঁকে বাংলোচি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। যদিও ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর তুষারকান্তি ঘোষ কিংবা কারও নামেই ওই ৬৭৭ নং বাংলো বরাদ্দ বা অ্যালটমেন্ট হয়নি বলে একটি আরটিআই-এর জবাবে জানায় রেল। গত ৫ এপ্রিল (শনিবার) এই বিষয়টিই প্রকাশ্যে আসে তৃণমূল নেতা দেবাশিস চৌধুরীর করা একটি আরটিআই-এর ভিত্তিতে। তারপরই তৈরি হয় বিতর্ক। যদিও ওই দিনই ডিআরএম কে.আর চৌধুরী জানিয়েছিলেন, “আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” বৃহস্পতিবার তা অবশেষে তা নেওয়া হল। খড়গপুর ডিভিশনের এস্টেট অফিস অ্যান্ড কোর্টের তরফে একটি নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ওই বাংলো দখল করে আছেন প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটির প্রাক্তন সদস্য তুষারকান্তি ঘোষ। তা অবিলম্বে ছাড়তে হবে।
নোটিসে আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে এই জবর দখলের কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে তুষারকান্তি ঘোষকে। সেইসঙ্গে ২১ এপ্রিল বেলা ১টায় সশরীরে তাঁকে অথবা তাঁর নিযুক্ত কোনও প্রতিনিধিকে সমস্ত নথিপত্র নিয়ে খড়গপুর ডিভিশনের এস্টেট অফিসারের কাছে উপস্থিত হতে হবে। ইতিমধ্যেই নোটিসটি রেলের তরফে সেঁটে দেওয়া হয়েছে সাউথ সাইড এলাকার অবস্থিত সেই ৬৭৭ নং বাংলোয়। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ‘রেল শহর’ খড়গপুরে। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “সত্যের জয় হল। অনেক বড় বড় কথা বলতেন দিলীপ ঘোষ। এবার কী বলবেন? বৈদ্যুতিক বিল-সহ কোনওরকম ভাড়া না দিয়েই জবরদখল করেছিলেন এতদিন। ওঁর জন্য বিপদে পড়তে হল জনৈক তুষারকান্তি ঘোষকে।”