• ‘মুখ্যমন্ত্রী আপনি তো শিক্ষকের কাছেই পড়েছেন, কেন আমাদের লাথি মারলেন?’
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • সকাল থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া জন্য তৈরি হওয়া। তারপর কেউ বাসে কেউ ট্রেন চেপে স্কুলে যেতেন। এরপর সারাদিন ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা। এটাই রোজকার রুটিন। কিন্তু সব যেন আচমকা বদলে গিয়েছে। এতদিন টেলিভিশনের পর্দায় তাঁরা দেখতেন রাস্তায় নেমে আন্দোলনের ছবি! এতদিন সুখী গৃহকোণে বসে দেখতেন মিছিল যাচ্ছে। প্রতিবাদের মিছিল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মিছিল। সেই মিছিলে ডাক উঠত উই ওয়ান্ট জাস্টিস। দূর থেকে সেসব দেখতেন শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ। আর এখন সেই তাঁরাই নেমে এসেছেন রাজপথে। কারোর চোয়াল শক্ত। মুষ্টিবদ্ধ হাত। প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে বুকে। যে শিক্ষিকা অত্যন্ত শান্ত হয়ে স্কুলে যেতেন তিনিও স্লোগান তুলছেন, চিৎকার করছেন রাস্তায়, আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দিন। যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করুন। অযোগ্যদের তালিকা তৈরি করে দিন।

    সব কেমন ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল। বৃহস্পতিবার মিছিলও করলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। কসবায় প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে লাথি, লাঠি দুটোই খেতে হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মিছিলে বেরিয়ে মুখ খুললেন একাধিক শিক্ষিকা।

    এক শিক্ষিকা সংবাদমাধ্যমে বলেন, কিছু বলার নেই। আমাদের কিছু নেই আর। সব শেষ। আমাদের একটাই দাবি, পরীক্ষার ফলাফলের প্রমাণপত্রটা পাবলিশ করে দিক। যোগ্য় ও অযোগ্য সার্টিফাই করে পাবলিশ করে দিক। এটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলে তারপর রিভিউ পিটিশনে ফিরে আসতে পারব। কালকে কসবায় যা হল শুধু আমাদের মেরেছে তা নয়, এটা সমাজের মেরুদন্ডে লাথি মারা হয়েছে। যে ডাক্তার যে শিক্ষক, মুখ্য়মন্ত্রী নিজে কার কাছে পড়াশোনা করেছেন, শিক্ষকের কাছেই করেছেন অন্য় কারোর কাছে করেননি। সেই শিক্ষকের বুকে লাথি মেরেছেন। এর থেকে আর কিছু বলার নেই। আমাদের কি এখানে থাকার কথা! ছোট ছোট বাচ্চাগুলো মেসেজ করছে ম্যাডাম আপনি আসছেন না! কী উত্তর দেব! আপনার শরীর ঠিক আছে! শরীরী খারাপ নয় তো! টাকাপয়সা জড়িত। সেটা তো আছেই। সেই সঙ্গেই বাচ্চাদের সঙ্গে একটা ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট আছে। সেটা শেষ হয়ে গেছে। এর থেকে আর কিছু বলার নেই। মানবিকতা যদি কিছু থাকে তাহলে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করুন যোগ্য আর অযোগ্যের তালিকা।

    অপর এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, আমরা করুণ পরিস্থিতিতে পড়েছি। পুলিশ আমাদের লাথি মেরেছে। আমরা ধিক্কার মিছিল বের করেছি। পুলিশ মন্ত্রী আপনি কীসের ভিত্তিতে আমাদের লাথি মারলেন? আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা শখে এখানে আসিনি।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)