বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ এপ্রিল ২০২৫
রাজ্য–রাজনীতিতে এখন বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়া। এই ইস্যুকে সামনে রেখে সিপিএম–বিজেপি রে রে করে নেমে পড়েছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি’র গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। তার জেরে চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৩৫ জন। এই আবহে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে একটি ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ তুলে দায়ের হয়েছে মামলা। সিপিএম আমলে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দমদমের এক বাসিন্দা মামলা করলেন। ওই মামলায় তিনি নিজের স্ত্রী–সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা দায়ে হয়েছে সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, দুর্নীতি করে অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী–সহ বেশ কয়েকজন। দুই সিপিএম নেতা ওই চাকরি দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন। মামলাকারীর দাবি, ওই দুই বাম নেতা হলেন সূর্যকান্ত মিশ্র এবং বিশ্বনাথ চৌধুরী। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছেন ওই মামলাকারী। ২০০৬ সালের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ২০০৬ সালের নিয়ম অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক পাশ যাঁরা তাঁরাই এই কাজের যোগ্য। যাঁরা স্নাতক বা তার থেকে বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে তাঁরা এই কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু এই ব্যক্তির স্ত্রী স্নাতকোত্তর হয়েও এই চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। আর নিয়মবিরুদ্ধ পথেই নিয়োগ হয় তাঁর স্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিনও বলেছিলেন, বাম জমানায় চিরকুটে চাকরি হতো। সিপিএমের মুখপত্রে যাঁরা চাকরি করেন তাঁদের স্ত্রীরা সকলেই শিক্ষা দফতরে চাকরি পেয়েছেন। এই আবহে এবার ওই মামলাকারী নিজের স্ত্রী–সহ আরও কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী দুই সিপিএম নেতার সাহায্য চাকরি পান বলে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি জানান, চাকরি যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সকলেই সিপিএম পরিবারের সদস্য। মামলাকারী দুর্নীতির বিরোধিতা করে ২০১৮, ২০২২ এবং ২০২৫ সালে শিশু ও নারী কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী, পুলিশ–সহ নানা স্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু উপযুক্ত পদক্ষেপ না করার ফলে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। এফআইআর করার দাবিতে এবং সিআইডি তদন্ত চেয়ে মামলা করেন তিনি।
এই ঘটনায় সিপিএমের মাথায় বাজ পড়েছে। কারণ তাঁরাই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে সরব। তাঁরাই মামলা করে চাকরি আটকান। এখন তাঁদের আমলেই নিয়োগ দুর্নীতি সামনে চলে এল। এই বিষয়ে আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বাম রাম সব এক হয়ে গিয়েছে। এটা ওদের চক্রান্ত। বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আছে। বলেছিল সিপিএম জমানায় যে ১০,৩২৩ জনের চাকরি গিয়েছিল আমরা তাদের চাকরি করে দেব। আগে সেটা করুক। এখন তো শিক্ষকগুলিকে পথে বসিয়েছে। নিট পরীক্ষায় অনিয়ম, ব্যাপম কেলেঙ্কারি, বিজেপি সব রাজ্যে যে অরাজকতা করেছে সেটা ঠিক হোক।’