বাংলায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ কেন? কেন্দ্রের রিপোর্ট তলব করে সময়সীমা বাঁধল হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ এপ্রিল ২০২৫
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হেরে যায় বিজেপি। তার পর থেকে রাজ্যে মহাত্মা গান্ধী রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম প্রকল্প বন্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। এই ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। সেটা নিয়ে এবার জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তিন সপ্তাহের মধ্যে ওই মন্ত্রককে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে ওই জনস্বার্থ মামলাতেই তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ১৫ মে তারিখের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার না দেওয়ায় সেই বকেয়া টাকা জবকার্ড হোল্ডারদের দিয়েছে রাজ্য সরকার। বকেয়া টাকা না দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বারবার সুর চড়িয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী এবং সাংসদরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য সভায় এই নিয়ে সরব হয়েছেন বহুবার। এবার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধের কারণ কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।
অন্যদিকে ১০০ দিনের কাজে ভুয়ো জবকার্ড, মৃত ব্যক্তির নামে জব কার্ড, অসত্য তথ্য দিয়ে জবকার্ড তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। আর এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটির নোভাল অফিসার গত ২০ মার্চ আদালতে রিপোর্টে জমা দেওয়া জানান, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিং জিটিএ এরিয়াতে ১০০ দিনের কাজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ওই চার জেলা থেকে মোট ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে।
এছাড়া মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, কেন রাজ্যে এমন হচ্ছে? সেটা খতিয়ে দেখে সরাসরি হস্তক্ষেপ করুক কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের ডিভিশন বেঞ্চে ১০০ দিনের কাজের মামলার শুনানি ছিল আজ, বৃহস্পতিবার। আর যে অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়েছে তা প্রকৃত প্রাপকদের দ্রুত বণ্টনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাডিশনাল সলিসিটার অশোক চক্রবর্তী কলকাতা হাইকোর্টে জানান, ১০০ দিনের প্রকল্পে মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল। তার মধ্যে ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকার মতো পুনরুদ্ধার হয়েছে। রাজ্যই তা উদ্ধার করেছে। তখনই এই মামলায় রাজ্য সরকারকে পার্টি হিসেবে যুক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই আগামী ১৫ মে তারিখের মধ্যে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে রিপোর্ট দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।