প্যানিক বোতাম সংক্রান্ত নির্দেশ মানতে নারাজ বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি, অভিযোগ জানাবে পরিবহণমন্ত্রীর কাছে
আনন্দবাজার | ১০ এপ্রিল ২০২৫
প্যানিক বোতাম (বিএলটিডি) সংক্রান্ত পরিষেবা পুনর্নবীকরণের সরকারি নির্দেশিকায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের বেশির ভাগ পরিবহণ সংগঠন। আগামী শুক্রবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা। বছর দুয়েক আগে ভিএলটিডি সব রকম যানবাহনে লাগানো বাধ্যতামূলক করেছিল রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নতুন এই পরিষেবা রাজ্যের সব ধরনের যানবাহনে লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল, ভিএলটিডি প্রযুক্তি গাড়িতে না-লাগানো হলে সেই গাড়িকে রাস্তায় নামার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। দাবি করা হয়েছিল, ওই নতুন প্রযুক্তিতে প্যানিক বোতাম রাখা হয়েছে। যেখানে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীরা ব্যবহার করে পুলিশ- প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে দেরিতে হলেও এই পরিষেবা বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত যানবাহনগুলিতে সংযুক্ত করা হয়েছিল ।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সব গাড়ির ভিএলটিডি পরিষেবাগুলি নির্দিষ্ট সময়ে পুর্ননবীকরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আট বছর বয়সের কমবয়সি গাড়িগুলিকে কমপক্ষে দু’বছরের জন্য এই পরিষেবা পুনর্নবীকরণ করতে হবে। তার বেশি বয়সি গাড়িগুলিকে প্রতি বছর তা পুনর্নবীকরণ করতে হবে। খরচ হবে ২০০০ টাকা। এই নির্দেশ মেনে চলা বাধ্যতামূলক বলেও জানিয়েছে পরিবহণ দফতর। তা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির নেতারা। তাঁদের কথায়, ভিএলটিডি পরিষেবা যুক্ত করা হয়েছিল যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে। বলা হয়েছিল, ভিএলটিডির প্যানিক বোতামে চাপ দিলেই পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় হয়ে গাড়িটির সঙ্গে যোগাযোগ করে যাত্রী নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করবেন। কিন্তু বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবি, তারা পরীক্ষা করে দেখেছে বার বার প্যানিক বোতামে চাপ দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসনের সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের প্রশ্ন, এই পরিষেবা ব্যবহার করে পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তাই যদি না পাওয়া যায়, তবে এর কী প্রয়োজনীয়তা আছে?
অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি ওই প্যানিক বোতাম ঠিকঠাক ভাবে কাজ করত তবে আমরা আপত্তি করতাম না। কিন্তু ভিএলটিডির কোনও উপযোগিতা নেই। এমতাবস্থায় কেন আমরা সরকারের নির্দেশিকা মেনে তা পুনর্নবীকরণের জন্য অর্থ খরচ করব? এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান মন্ত্রীকে জানাব।’’ বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘করোনাকালে লকডাউনের জেরে বেসরকারি পরিবহণ কোমায় চলে গিয়েছে। বাসমালিকেরা যাতে কম খরচে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে পারেন, সরকারের সেই বন্দোবস্ত করা উচিত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভিএলটিডি গাড়িতে লাগিয়ে আমরা বা যাত্রীরা কেউই লাভবান হচ্ছে না। তা হলে এই নতুন প্রযুক্তি অযথা গাড়িতে লাগিয়ে রাখার প্রয়োজন কী? এই বিষয়ে আমরা পরিবহণমন্ত্রীর কাছে সবিনয়ে জানতে চাইব।’’ বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতারা সকলেই শুক্রবারের বৈঠকে একসুরেই পরিবহণমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানাবেন বলেই সূত্রের খবর।