‘ওয়াকফ আইন জারি করতে দেওয়া হবে না’! মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন পেয়ে আশ্বস্ত সিদ্দিকুল্লা
আনন্দবাজার | ১০ এপ্রিল ২০২৫
ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে আশ্বাস পেলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার নয়া ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে কলকাতায় মৌলালি থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত সংখ্যালঘু সমাজের একটি মিছিল হয়। মিছিল শেষে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে সিদ্দিকুল্লা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে তাঁর কাছে ফোন এসেছিল। ওই সময়ে তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ওয়াকফ আইন জারি করতে দেওয়া হবে না।
রাজ্যে শাসকদলের সংখ্যালঘু নেতাদের অন্যতম মুখ সিদ্দিকুল্লা। গত কয়েক দিন ধরে কেন্দ্রের সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার সরব হয়েছেন তিনি। বেশ কিছু প্রতিবাদ কর্মসূচিও করেছেন। সম্প্রতি সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। ওই সময়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘এমন কিছু পরিস্থিতি হয়নি, যার জন্য পুলিশকে এ ভাবে লাঠিচার্জ করতে হবে।’’
বৃহস্পতিবার মিছিল শেষে সংখ্যালঘু সমাজের মানুষকে অশান্তি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সিদ্দিকুল্লা। কেউ যাতে কোনও উস্কানিতে পা না-দেন, সেই অনুরোধ করেছেন তিনি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার জন্য বলেছেন। বস্তুত, জঙ্গিপুরে উত্তেজনার পরিস্থিতিতে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি নদিয়ার নবদ্বীপেও একটি লরিতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। পর পর এই অভিযোগগুলির আবহে সিদ্দিকুল্লা বললেন,“যাত্রিবাহী বাস ভাঙচুর হোক চাই না। কেউ ভাঙচুর করে থাকলে আমরা দুঃখিত।” ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে এক কোটি মানুষের গণ স্বাক্ষরিত চিঠি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিদ্দিকুল্লা। রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি সিদ্দিকুল্লা সংখ্যালঘুদের সংগঠন ‘জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ’-এর রাজ্য সভাপতিও।
বস্তুত, ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সংসদে সরব তৃণমূল। সংসদে এই বিল নিয়ে আলোচনার সময়েও নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরা। সংসদে বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার পরে গত শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পার্ক সার্কাস সাতমাথার দখল নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল একাধিক মুসলিম সংগঠন। ক্রমে সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের অন্যান্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও। এই পরিস্থিতিতে বুধবার নেতাজি ইন্ডোরের একটি সভা থেকে ওয়াকফ নিয়ে বাংলার সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের মমতা আশ্বাস দেন, ‘দিদি’ হিসাবে তিনি মুসলিমদেরও পাশে থাকবেন এবং তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করবেন।