চাকরি কি ফিরে পাওয়া যাবে? আগামী মাসে বেতন মিলবে? যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা দেওয়া হবে? হাজারো প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের একাংশ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ, আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। কয়েকজন এসএসসি ভবনের সামনে শুরু করেছেন অনশনও। রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নেবে, তার দিকে তাকিয়ে আছেন সকলেই। তবে আইন মোতাবেক সকলের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার ফের আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে ব্রাত্য বলেন, ‘এই সমস্যার জট আইনি পথেই খুলতে হবে। আমি আশাবাদী, আইনি পথেই এই জট ছাড়ানো যাবে।’ তাঁর দাবি, তিন মাসের মধ্যেই জট ছাড়বে কি না অথবা চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের নিজের কাজে ফেরানো যাবে কি না সেটা রায়ে উল্লেখ নেই। তবে এসএসসি তিন মাসের আগেই সমস্যা মিটিয়ে ফেলবেন বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যে বিকল্প পথ জানিয়েছে, সেটা তিন মাস বা তার আগেই করা সম্ভব বলে এসএসসি জানিয়েছে।’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই দাবি নিয়ে যথেষ্ট ‘আত্মবিশ্বাসী’ বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘নতুন এসএসসিকে নিয়ে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী। নিশ্ছিদ্র, দুর্নীতিমুক্ত তো বটেই, স্বচ্ছ নিয়োগ আমরা করতে পারব। সেটা সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনেই।’ ব্রাত্য সেই সাক্ষাৎকারে আরও জানান, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যেই ‘ক্লারিফিকেশন’ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনও ‘ক্লারিফিকেশন’ চাইতে দেশের শীর্ষ আদালতে যাবে।
এই আইনি পথে সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার মাঝে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা কি বেতন পাবেন? বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শিক্ষকরা তাঁদের যোগ্যতা দিয়েই বেতন পান। আগামী ১ তারিখ বেতনের দিন রয়েছে। তার আগে আমরা ক্লারিফিকেশন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে দিয়েছি। এর মাঝে তো অনিশ্চয়তার মেঘ কোথায় সেটাই আমি ধরতে পারছি না।’
এসএসসির ২০১৬ সালের পরীক্ষার প্যানেলে কারা যোগ্য? কারা অযোগ্য? সেই তালিকা প্রকাশের দাবি নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের পথে গিয়েছেন চাকরিহারা প্রার্থীদের একাংশ। সেই যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব বলেই মত শিক্ষামন্ত্রীর। ব্রাত্য বলেন, ‘যোগ্য অযোগ্য তালিকা আছে। ওঁরা যদি (চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী) যোগ্যদের তালিকা দেখতে চায়, গণমাধ্যমে ওঁদের আবেদন শুনেছি, সেটা নিয়ে আইনজীবীদের পরামর্শ নেব। আইনজীবীরা যদি বলেন, সেটা ওয়েবসাইটে দেওয়া যাবে, তা হলে সেটা আপলোড করে দেব।’ শুক্রবার চাকরিহারাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক আছে, সেই বৈঠকে এই প্রস্তাব দেওয়া হলে, তা গ্রাহ্য করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।