• মাত্র ১০ মিনিটের আনন্দ, অবশেষ পরিণতি মৃত্যু! কতটা সতর্ক জনগণ, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা...
    আজকাল | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর ঘটা করে পালিত হয় স্বাস্থ্য দিবস। বিভিন্ন স্তরের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ও চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তাসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করেন এই দিনটায়। শুধু স্বাস্থ্য দিবস নয়, প্রায় প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে একাধিক কর্মসূচি করে চলেছেন চিকিৎসকরা সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কিন্তু তথাপি সচেতনতার অভাবে বহু মানুষ বিভিন্ন সময় আক্রান্ত হয়ে পড়েন গুরুতর রোগে। যার পরিণতি মৃত্যু। সেই ভয়াবহ রোগগুলির মধ্যে অন্যতম 'এডস' (এইচআইভি) যা মারণ রোগ বলেই পরিচিত আমাদের সমাজে। আর এই রোগের কারণে ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এডস দিবস পালিত হয় সুরক্ষা ও সচেতনতার বার্তা নিয়ে।

    উল্লেখযোগ্য বিষয়, চিকিৎসাশাস্ত্র মতে এই রোগ ছড়ানোর প্রধান কারণ রক্ত সংক্রমণ। মূলত, নারী-পুরুষের মধ্যে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক এ ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। ইনজেকশনের মাধ্যমে এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে। তবে, ক্ষৌরকার্যের সময় এর সংক্রমণ ঘটতে পারে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। কারণ, চিকিৎসাবিজ্ঞান মতে এই রোগের জীবাণু দশ সেকেন্ডের বেশি জীবিত থাকতে পারে না। তাই ক্ষৌরকার্যের সময় এই জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ সম্ভব নয় বলে সিংহভাগ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মত। 

    পরিসংখ্যানগত দিক থেকে দেখলে, বিশ্বে এই মুহূর্তে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯.৯ মিলিয়ন (৩ কোটি ৯৯ লক্ষ)। যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা ৩৮.৫ মিলিয়ন এবং শিশু ১.৪ মিলিয়ন। মার্কিন রিপোর্ট অনুযায়ী, শেষ পরিসংখ্যানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি এক লক্ষে ১১.৩ শতাংশ। তথ্য অনুযায়ী, ভারতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৪০০ অর্থাৎ ২০১০ সালের পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ শতাংশ নিম্নগামী। বর্তমানে সারাদেশে এইচআইভি পজিটিভ অর্থাৎ এইডস রোগীর আনুমানিক সংখ্যা ২৫ লক্ষ। 

    এই রোগের উৎস খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সমকামী যুবকের শরীর প্রথম এই রোগ বাসা বাঁধে। এই রোগ প্রথম চিহ্নিত করা হয় ১৯৮৩ সালে। ওই সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০৬৪ জন। যার মধ্যে মৃত্যু হয় ১২৯২ জনেরই।

    এই বিষয়ে আজকাল ডট ইন-এর পক্ষ থেকে সরাসরি কথা বলা হয়েছিল ভারতীয় ভাইরোলজিস্ট যোগীরাজ রায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, "পূর্বের তুলনায় বর্তমানে এই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ ঘটার মূল কারণগুলি হল, মাদকাসক্তিতে ইনজেকশনের অপ্রতুল ব্যবহার, পুরুষ সমকামিতা, বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপের অপরিসীম ব্যবহারের মাধ্যমে। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় এই 'ডেটিং অ্যাপ' গুলিতে যৌন সম্পর্কে সুরক্ষার বিষয়ে অসতর্কতার কারণে সংক্রমণের পরিমাণ অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।"

    তিনি আরও বলেন, "ক্ষৌরকার্যে কোনও ভাবেই এই সংক্রমণ সম্ভব নয়। কারণ, এই রোগের জীবাণু দশ সেকেন্ডের বেশি জীবিত থাকতে পারে না।"

    তিনি বলেন, "সচেতনতার পাশাপাশি সুরক্ষার দিকটাও প্রচণ্ড পরিমাণে নজর দেওয়া এবং প্রয়োজন মতো ডাক্তারি পরামর্শ ও টেস্টগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ। তাহলেই এই ধরনের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সামাজিক অস্পৃশ্যতাকেও দূর করতে হবে, কারণ এটি কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়।"
  • Link to this news (আজকাল)