কসবায় শিক্ষকদের আন্দোলনে ভাঙচুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের স্বতোঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ, কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ! ...
আজকাল | ১১ এপ্রিল ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিলের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আশ্বাস দিয়েছিলেন কারও চাকরি যাবে না। তিনি কর্মরত থাকতে বারবার আবেদন জানিয়েছিলেন সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। তারপরেও গতকাল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ ও আন্দোলন সংঘটিত করেন। তার মধ্যে কলকাতায় কসবা-সহ রাজ্যের কয়েকটি জেলা ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচি নজর কেড়েছে সকলের। বুধবার ৯ এপ্রিল কসবা ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ও প্রতিবাদী মিছিল সংগঠিত হয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পক্ষ থেকে।
এই আন্দোলন ঘিরে অভিযোগ বিস্তর। অভিযোগ, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা আন্দোলনের নামে ডিআই অফিসে বলপূর্বক ঢুকে গিয়ে সেখানকার বহু ফাইল ও নথি লোপাটের চেষ্টা এবং পুলিশের উপরে আঘাত করেন। এরপরই পুলিশ বাধ্য হয়ে তাঁদের ওপর লাথি ও লাঠিচার্জ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কারণে। কলকাতা পুলিশের নগরপাল মনেজ ভার্মা, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নবান্ন থেকে বৈঠক করে বুধবার পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতির কারণে সামান্য বলপ্রয়োগ করতে হয়েছিল। তবে গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে তিন-চার জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। যদিও তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
সূত্রের খবর, গতকাল কসবার ঘটনায় বেশ কিছু বহিরাগতকে প্রবেশ করানো হয়েছিল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য। এবং একই সঙ্গে ঘটনাস্থলে প্রথমে পুলিশ আধিকারিককে নানাভাবে উত্তপ্ত এবং তাঁর গায়ে হাত তোলা ও তাঁর ঊর্দিকে টেনেহিচড়ে ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টাও করা হয়। এরপর ওই পুলিশ আধিকারিক আতঙ্কিত হয়ে আত্মরক্ষার তাগিদে হাত-পা চালিয়ে দেন।
জানা গিয়েছে, কসবার ঘটনায় একজন আধিকারিক-সহ ছয় জন পুলিশকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে দু'জন মহিলা কনস্টেবল ও তিনজন পুরুষ কনস্টেবল। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট পদমর্যাদার আধিকারিক তন্ময় মণ্ডলের ঘটনাস্থলে পা ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও, একাধিক পুলিশকর্মী আক্রমণের ফলে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কসবার ঘটনায় কমিশনার মনোজ ভার্মা পুরো ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন কেন এমন ঘটনা ঘটল। একই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ ও লাথি মারার যে অভিযোগ উঠেছে সেই বিষয়েও তদন্তের নির্দেশ দেন সাউথ সাবারবান ডিভিশনের ডিসিপি বিদিশা কলিতা দাশগুপ্তকে। কমিশনারের নির্দেশ, অতি শীঘ্র তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে কেন এমন ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশ স্বতোঃপ্রণোদিত মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে। ভারতী ন্য়ায় সংহিতার (বিএনএস) ধারা ৯০, ১৯১(২),১১৫(২), ১৩২, ১২১(২), ৩৫১(২), ২৮৫ এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।