বিয়েতে মোটা অঙ্কের টাকা পণ নিয়েও মন ভরেনি আনন্দ মাইতির। আরও টাকার জন্য চাপ দেওয়া হতো স্ত্রী সোমাশ্রী পাল-কে। গাড়ি কেনার জন্য দাবি করা হয়েছিল ৩ লক্ষ টাকা। দাবি মতন সেই টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুন করেন আনন্দ মাইতি। এই খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে আনন্দকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডর আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার ওই সাজা ঘোষণা করেছে মেদিনীপুর জেলা আদালত।
মেদিনীপুর জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশীষ মাইতি জানান, বুধবারই আনন্দ মাইতিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন জেলা আদালতের বিচারক সেলিম শাহী। বৃহস্পতিবার তার সাজা ঘোষণা করা হয়। আনন্দকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডর সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত সোমাশ্রী পালের বাবা-মাকে ১ লক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে সবংয়ের তেমাথানির বাসিন্দা আনন্দ মাইতির সঙ্গে বিয়ে হয় ওই থানারই সোমাশ্রীর। সোমাশ্রী পালের বাবা মন্টু পাল এক গৃহশিক্ষক। আর আনন্দ গাড়ি চালক। বিয়েতে লক্ষাধিক টাকার পণ নিয়েছিলেন অ্যানন্দ। এর পরে নিজের গাড়ি কেনার নাম করে স্ত্রী এবং শ্বশুরের কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেন আনন্দ। সেই টাকা দিতে না প্রায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ত্রী-র গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন আনন্দ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তবে ওই খুনকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টাও করেন তিনি । সোমাশ্রীর বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় আনন্দকে।
আদালত জানিয়েছে, এই ঘটনায় ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ওই খুনের মামলার রায় ঘোষণা পর সোমাশ্রী পালের বাবা মন্টু পাল ও মা তুলসী পাল জানান, বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা ছিল তাঁদের। এত দিন পরে রায় ঘোষণা হলেও তাঁরা শান্তি পেয়েছেন।