মমতা ব্যানার্জি আছেন, তাই বাংলা বেঁচে আছে, সংগঠনের সদস্যদের বার্তা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার
আজকাল | ১১ এপ্রিল ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: অফিসে যাব, কাজ করব না। এটা চলবে না। ফেডারেশন করলে কাজ করতে হবে। মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। না পারলে ফেডারেশন করতে হবে না। আর ফেডারেশন করলে কোনও দুর্নীতি করা যাবে না। এই ভাষাতেই বৃহস্পতিবার জেলা সম্মেলনের মঞ্চ থেকে সংগঠনের সদস্যদের কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রাজ্য ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ডাঃ মানস ভুঁইয়া।
বৃহস্পতিবার কয়েক হাজার সরকারি কর্মচারীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্মেলনের প্রথম বর্ষ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে চুঁচুড়ার রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন, রাজ্য কনভেনর প্রতাপ নায়েক, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুইন, হুগলি জেলা পরিষদের সভধিপতি রঞ্জন ধারা, চন্দননগর পুরনিগমের মেয়র রাম চক্রবর্তী, হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায়, ডানকুনি পুরসভার চেয়ারম্যান হাসিনা শবনম, প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার, কৃষ্ণচন্দ্র মালিক, জেলা মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি প্রমুখ।
জেলা সন্মেলনে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার, ত্রাণ, উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্য মন্ত্রীর একাধিক জনকল্যাণকর পদক্ষেপের কথা। বক্তব্যে শোনা গিয়েছে সাধারণের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সরকারি নিয়ম সরলীকরণের প্রসঙ্গ। বাংলার ভূমি পোর্টালের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমানো, কৃষিজমি মিউটেশনের ক্ষেত্রে আবেদন ফি মুকুব করা, মিউটেশন কনভারসানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া। ই-নথিকরণ, দুয়ারে সরকার-সহ মুখ্য মন্ত্রীর নানা উদ্যোগে উপকৃত হয়েছে রাজ্যের অসংখ্য মানুষ। ২০১১ সালের পর থেকে গত ১৩ বছরে রাজ্যের ১৫৬টি ব্লকে সমষ্টি উন্নয়ন এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরের নিজস্ব ভবন তৈরি হয়েছে। সর্বোপরি আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগে উন্নত হয়েছে পরিষেবা।
মানস বলেছেন, দু'বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ফেডারেশনের কাজের দায়িত্ত্ব তাঁকে দিয়েছিলেন। বর্তমানে রাজ্যে ফেডারেশানের সক্রিয় সদস্য সংখ্যা তিন লক্ষে পৌঁছেছে। ফায়ার ব্রিগেড, জেল, এক্সাইজ, ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট-সহ রাজ্যের প্রায় সমস্ত বিভাগেই ফেডারেশন রয়েছে। এখনও কিছু জায়গায় ধাক্কা খেতে হচ্ছে। প্রথম ধাক্কা ভূমি দপ্তরে। তারপর ফিসারিজ। কাজ চলছে, হয়ে যাবে। মনে রাখবেন ফেডারেশন করে দুর্নীতি করা যাবে না। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। রাজ্য বিধানসভায় এই রাজ্যেই প্রথম রাইট টু সার্ভিস অ্যাক্ট চালু করা হয়েছে। তার মানে আপনাকে কাজ করতে হবে। মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। ফেডারেশন করলে কাজ করব না, এটা চলবে না।
কেন্দ্র সরকারকে কটাক্ষ করে মন্ত্রী বলেছেন, "রাজ্যের পাওনা ২ লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। ডিভিসি না জানিয়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছিল। অথচ বন্যা নিয়ন্ত্রণে এক টাকাও দেয়নি। গত ২০১৬ সাল থেকে এফএমএস প্রোগ্রামে এক টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। অথচ এরাজ্যে ১১.২০ কোটি মানুষের মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি মানুষ বিনে পয়সায় রেশন পায়। রেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু সিপিএম-বিজেপি দেখা হয় না। বাংলা বেঁচে আছে মমতা ব্যানার্জি আছেন বলে। নাহলে শুকিয়ে যেত।"
ফেডারেশনের রাজ্যে কনভেনর প্রতাপ নায়েক বলেছেন, "ফেডারেশন সবসময় কর্মচারীদের পাশে রয়েছে। মানুষকে দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে। মানুষের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজ্যের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৯২টি প্রকল্প করে দিয়েছেন। সেই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। আগামী ২০২৬ সালের লক্ষে ফেডারেশন সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই করবে। আবারও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা ব্যানার্জি।