নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বাংলার বকেয়া মেটাবেন না বলে নানা অজুহাতে সাক্ষাৎ এড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়িতে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে রিভিউ বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এভাবেই সরব হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের কাছে শুধুমাত্র রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের ৩০ হাজার কোটি টাকা পাওনা। বাংলার ওই ন্যায্য বকেয়া যাতে দিতে না হয়, সেকারণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইছেন না। ভিডিও কনফারেন্সে অনেক মিষ্টি কথা বলেন তাঁরা। দুঃখপ্রকাশ করেন। সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবে সেই আমন্ত্রণের চিঠি আর আসে না।
প্রদীপবাবুর তোপ, বাংলার ন্যায্য পাওনা এড়াতেই নানা অজুহাতে সাক্ষাৎ এড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। কিন্তু কেন্দ্রের এই সীমাহীন বঞ্চনা উপেক্ষা করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে বাংলা। এদিকে পঞ্চায়েতের কাজে আরও গতি আনতে আগে থেকে পরিকল্পনা তৈরি করে এগতে হবে বলে জানান বৈঠকে উপস্থিত দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। বলেন, প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। পঞ্চায়েতগুলিকে নির্মল মিশন বাংলা প্রকল্পের কাজে বিশেষ জোর দিতে হবে। বৈঠকে পঞ্চায়েত দপ্তরের আরও এক প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহাও হাজির ছিলেন। মহিলাদের স্বনির্ভরতায় ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণের সব টাকা সময়ে খরচ না হওয়ায় কিছুটা ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মালবাজারের বিধায়ক বুলুচিক বরাইক। তিনিও আদিবাসী উন্নয়নের টাকা সময়ে খরচের উপর জোর দেন। রাজ্যের ২৩টি জেলায় এসসি, এসটি ছেলেমেয়েদের জন্য নিখরচায় রাজ্য সরকার চাকরির কোচিং ক্যাম্প চালু করেছে বলে জানান তিনি। ১১৫০ জন পড়ুয়াকে ওই কোচিং দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে ‘বাংলার বাড়ি’র কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, সেব্যাপারে প্রশাসনের আধিকারিকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগী হতে বলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী। জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেসব উপভোক্তা ঘর তৈরির টাকা পেয়েছেন, তাঁদের কাছে নিয়মিত যেতে হবে। তাঁরা ঠিকমতো ঘর তৈরি করছেন কি না সেব্যাপারে যেমন খোঁজখবর নিতে হবে, তেমনই তাঁদের মনে গেঁথে দিতে হবে কতটা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই টাকা দিয়েছেন। আগামী মাসেই ‘বাংলার বাড়ি’র দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ঢুকবে বলে জানান তিনি। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে জলপাইগুড়ি জেলার পারফরম্যান্সে সন্তোষপ্রকাশ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তবে এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির তুলনায় জেলা পরিষদ বেশকিছুটা পিছিয়ে। তাদের কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। জেলায় ১৮০০ মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৯৯৫ কোটি টাকা লোন দেওয়া হয়েছে বলে জানান।