নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: গত ২৪ ঘণ্টার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি ও ঝড় হাওয়ায় বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় এক বিএসএফ জওয়ানের। কোথাও গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কোথাও আবার বিদ্যুৎ ও পানীয় জল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে চা বাগানে ব্যাপক উপকার হয়েছে বলে বাগান মালিকরা জানিয়েছেন। এমন আবহাওয়া আরও তিনদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর আজ, শুক্রবার ও কাল, শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝোড়ো-হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৫০-৬০ কিমি গতিবেগে হাওয়া চলবে। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। এরপর হাওয়ার দাপট থামলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এতে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাবে। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, উত্তর-পূর্ব বিহারে বাতাসের উপরিভাগে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয়বাষ্পের আগমন ঘটেছে। এই দু’য়ের প্রভাবেই এমন আবহাওয়া তৈরি হয়েছে।
বুধবার রাত থেকে শিলিগুড়ির আকাশে মেঘ জমে। রাতভর বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হয়। সঙ্গে চলে ঝোড়ো-হাওয়া। এরজেরে বৃহস্পতিবার ভোরে ফাঁসিদেওয়ার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সূর্যাপুর গ্রামে বাজ পড়ে কর্তব্যরত এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম দীপক কুমার (৪২)। বিহারে তাঁর বাড়ি।
এদিকে, বাজ পড়ে শিলিগুড়ি শহরের বেশকিছু জায়গায় বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারজেরে এদিন ফুলবাড়ির প্লান্ট থেকে পানীয় জল শহরে সরবরাহ হয়নি। এতে চরম সমস্যায় পড়েন শিলিগুড়ির নাগরিকরা। পুরসভা সূত্রে খবর, বজ্রপাতের জেরে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। নকশালবাড়ি ও খড়িবাড়ির বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কাজ করছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। গাছ ভেঙে পড়ায় এদিন সকাল দীর্ঘক্ষণ বাগডোগরা-পানিঘাটাগামী রাজ্য সড়কের যান চলাচল বন্ধ ছিল। বনদপ্তরের বাগডোগরা রেঞ্জ অফিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাছটি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
এদিকে, এদিন ভোর থেকে কোচবিহারের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সকাল থেকে দফায় দফায় বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হয়। দুপুরের পর বৃষ্টি না হলেও আকাশ ছিল মেঘলা। ঝড়বৃষ্টির জেরে মাথাভাঙা-১ ব্লকের কুর্শামারির সাতগ্রাম ও হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম খাটেরবাড়ি, শিকারপুর পঞ্চায়েতের বড়দোলা গ্রামে কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথাভাঙা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজিবুল হাসান বলেন, ঝোড়ো-হাওয়া ও বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা তৈরির কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।
আলিপুরদুয়ার জেলার অবস্থাও ছিল একই। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ঝড় হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হয়। এতে ভুট্টা খেত কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে।