বিশ্বভারতীর গবেষকের মৃত্যু পুরুলিয়ায়, রহস্য ঘনীভূত
বর্তমান | ১১ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া ও সংবাদদাতা, বোলপুর: পুরুলিয়ায় বিশ্বভারতীর এক গবেষকের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিসও। পুলিস সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম অদ্রীশ দে (২৯)। বীরভূমের বোলপুরের রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের জোড়া শিবমন্দির এলাকায় তাঁর বাড়ি। বিশ্বভারতীর রুরাল এক্সটেনশন সেন্টারের ‘লাইফ লং লার্নিং অ্যান্ড এক্সটেনশন’ বিভাগে গবেষণারত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি গত দেড় বছর ধরে একটি এনজিওর রঘুনাথপুর শাখায় সোশ্যাল প্রোটেকশন ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন অদ্রিশ। ওই এনজিওর তরফে চেলিয়ামা রোডের আকুঞ্জা এলাকায় ভাড়া নেওয়া একটি বাড়িতে সংস্থার আরও কয়েকজনের সঙ্গে থাকতেন অদ্রিশও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো বুধবার সন্ধ্যায় অদ্রিশ ও সংস্থার ফার্মাসিস্ট দীপক চাঁদ হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়েই সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন অদ্রিশ। একটি ট্রাক এসে নাকি ধাক্কা মারে অদ্রিশকে। অদ্রিশ গুরুতর জখম হলেও তাঁর সঙ্গে থাকা যুবকের নাকি কিছুই হয়নি। এখানেই রহস্য দেখা দিয়েছে। অদ্রিশ যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়ির মালিক বন্ধন গড়াই বলেন, ‘আমাদের যিনি নাইট গার্ড দেন, তিনিই আমাকে ফোন করে বলেন যে, অদ্রিশবাবুর নাকি অ্যাক্সি়ডেন্ট হয়েছে। মারাত্মক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা ও সংস্থার কয়েকজন মিলে ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।’ রঘুনাথপুর হাসপাতালের অতিরিক্ত সুপার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রোড অ্যাক্সি়ডেন্ট হিসেবেই ওই যুবককে আনা হয়েছিল। অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। উন্নত চিকিত্সার জন্য স্থানান্তরিত করা হয়।’
অদ্রিশকে বুধবার রাতেই দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আড়াইটের সময়ে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অদ্রিশ যে সংস্থায় কাজ করতেন, সেই সংস্থার জয়েন্ট ডিরেক্টর দিব্যেন্দু ঘোষ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই মর্মান্তিক। ঠিক কী হয়েছিল তা জানার জন্য আমরা দীপকের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু গোটা ঘটনায় ও বিধ্বস্ত। কথা বলার মতো অবস্থাতেই নেই। ওর থেকে খুব সামান্য তথ্যই জানতে পেরেছি। তাতে ধোঁয়াশা কাটছে না এখনও। আমরা এনিয়ে রঘুনাথপুর থানায় এফআইআর করছি।’ দুর্ঘটনার ব্যাপারে ঠিক কী জানিয়েছেন অদ্রিশের সঙ্গে থাকা দীপক? উত্তরে এনজিওর জয়েন্ট ডিরেক্টর বলেন, ‘দীপকের ভার্সন অনুযায়ী, ও আর অদ্রিশ যখন হাঁটছিল তখন পিছন থেকে কিছুতে ধাক্কা মারে ওদের। দীপক পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। দীপকের যখন জ্ঞান ফেরে তখন দেখে যে, অদ্রিশ রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে। এরপর ও আমাদের সংস্থার ড্রাইভার চন্দনকে ফোন করে। চন্দন এসে ওদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় অদ্রিশের পাঁজরের ও শরীরের একাধিক অংশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ফুসফুস সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তবে দীপক সম্পূর্ণ অক্ষত ছিলেন। ঘটনা প্রসঙ্গে অদ্রিশের মামা গৌরাঙ্গ সাহা, দাদা সুমন সাহা ও বন্ধু প্রদীপ দলুই বলেন, ‘এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, অথচ পুলিসের কাছে কোনও খবর নেই! এক সহকর্মী ও ট্রাস্টের এক গাড়ি চালকের সঙ্গে অদ্রিশের ঝামেলা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। তাই এই মৃত্যুর পিছনে রহস্য আছে বলে আমাদের ধারণা। শীঘ্রই থানায় অভিযোগ জানাব।’ পুরুলিয়ার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হাসপাতালের তরফে থানায়