• সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত সার স্বল্পমূল্যে পাবেন চাষিরা
    বর্তমান | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: স্বল্প খরচে ভালো মানের কৃষিজ ফসল করতে এবং দূষণ থেকে রক্ষা করতে কৃষ্ণগঞ্জের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কেন্দ্রগুলির  উৎপাদিত জৈব সার জেলায় পথ দেখাতে চলেছে। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের তালদহ ও  কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েত থেকে শুক্রবার প্রথম এই সার স্বল্পমূল্যে প্রদান করা হবে। এই খবরে সীমান্তের চাষিরা খুশি। ৭টি পঞ্চায়েতের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার কেজি জৈব সার উৎপাদন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে মোট ৩৭টি ই-কার্ড গাড়ি রয়েছে। ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতে ঘুরে ঘুরে এই গাড়িগুলি বর্জ্য সংগ্রহ করে। এই প্রকল্প রূপায়ণে বাড়ি বাড়ি থেকে দু’টি বালতির মাধ্যমে  দু’ধরনের বর্জ্যকে আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে। পচনশীল এবং অপচনশীল। তবে পচনশীল নয়, এমন পদার্থের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক। বিভিন্ন জায়গায়  পাহাড়ের মতো জমে থাকা আবর্জনার স্তূপের ছবি পুর এলাকায় দেখা যায়। নির্মল বাংলা গড়ার লক্ষ্যে রাজ্যের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, পুরসভা এলাকায় চালু হয়েছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট। সেই মতো  পুরসভা এলাকায় সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থা দেখা যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় সেভাবে দেখা যায় না। তবে বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে। তাই জেলায় কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের পঞ্চায়েত এলাকায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারগুলিতে পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ব্লক প্রশাসন এই প্রজেক্ট করেছে। সীমান্ত এলাকায় এই সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারগুলিতে ৬ থেকে ৭ জন কাজ করে। বর্জ্য সংগ্রহ, পচানো, সার তৈরি সহ একাধিক কাজে এই কর্মীরা কাজ করছেন। ৪০  দিনের মধ্যে এখান থেকে জৈব সার পাওয়া যায় বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। এর ফলে পতঙ্গবাহিত রোগ মুক্ত করা ও প্লাস্টিক মুক্ত করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। 

    কৃষ্ণগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে চূর্নি ও মাথাভাঙা নদী। এই গোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে নদীকে দূষণের হাত থেকেও বাঁচানো যাবে। বেশ কিছুদিন ধরে এই ৭টি পঞ্চায়েতের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারগুলিতে পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে ১৫ হাজার কেজি জৈব সার উৎপাদন হয়েছে। এই সার শুক্রবার থেকে ৫ টাকা কেজি দরে প্রথম বিক্রি শুরু  হবে। ‘শ্রেষ্ঠ কৃষ্ণগঞ্জ’ ব্র্যান্ডের মাধ্যমে ২০ কেজির বস্তায় এই জৈব সার বিক্রি হবে। এই সার বিসিকেভির শংসাপত্র পাওয়ার পরই বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিও সৌগত কুমার সাহা। তিনি বলেন, ‘এই জৈব সার নদীয়াতে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক থেকে প্রথম বিক্রি হবে। বিসিকেভির শংসাপত্র পাওয়ার পরই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গোটা ব্লকের চাষিরা এই জৈব সার পাবেন। এর ফলে কালোবাজারিও আটকানো যাবে।’

    আজ শুক্রবার এই জৈব সার আনুষ্ঠানিকভাবে চাষিদের হাতে তুলে দেবেন সদর মহকুমা শাসক শারদ্বতী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই সারে ফলন খুব ভালো হবে। অল্প খরচে চাষি চাষ করতে পারবেন। সীমান্তে এই জৈব সারে প্রান্তিক চাষিরা উপকৃত হবেন।’
  • Link to this news (বর্তমান)