২২০ বছরের ইতিহাস ফিরে দেখছে কলকাতা, বাংলা ছাপা অক্ষরের জনক পঞ্চানন কর্মকারকে নিয়ে প্রদর্শনী
বর্তমান | ১১ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তাঁকে বলা হয় বাংলার ছাপার অক্ষরের জনক। এই মানুষটির অক্লান্ত পরিশ্রমেই বাংলা ভাষা একদিন ছাপার অক্ষরে মুক্তি পেয়েছিল।
শ্রীরামপুর নিবাসী পঞ্চানন কর্মকারের মৃত্যু হয় ১৮০৪ সালে। তখন তাঁর মাত্র ৫৪ বছর বয়স। তাঁর হাতে আকার পেয়েছে বহু হরফ, বহু পুঁথি। সেগুলি এবার চোখে দেখার সুযোগ এসেছে কলকাতায়। আজ, শুক্রবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের খেলাত ভবনে একটি প্রদর্শনী চলবে। লন্ডন থেকে নিয়ে আসা পঞ্চানন ব্যবহৃত ছাপার মেশিনটিও থাকবে সেখানে। পঞ্চানন কর্মকারের মৃত্যুর ২২০ বছর বাদে এই প্রথমবার এমন প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এই প্রথমবারই বাংলা অক্ষরের জন্মবৃত্তান্ত চোখে দেখার সুযোগ তৈরি হয়েছে কলকাতার কাছে। পঞ্চাননবাবুর আত্মীয় প্রিয়াঙ্কা মল্লিক বলেন, ‘আমার বাবা খুব যত্ন করে সমস্ত কিছু রেখে দিয়েছিলেন। বাংলার এই ঐতিহ্য-ইতিহাস সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি আমরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সব পুঁথি, হরফ নিয়ে শ্রীরামপুরে একটি সংগ্রহশালা তৈরির ইচ্ছা রয়েছে আমাদের। বিদেশে অনেকের কাছ থেকেই আমরা প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু এসব দেশের সম্পদ। আমরা চাই শ্রীরামপুরেই এগুলি থাকুক। সরকার হোক বা অন্য কোনও সংস্থা কেউ যদি এগিয়ে আসেন, খুব ভালো হয়।’
শুধু বাংলা নয় ৪০টিরও বেশি ভাষার টাইপোগ্রাফি তৈরি করেছিলেন পঞ্চাননবাবু। প্রথম বাংলা ব্যাকরণের বই, প্রথম ছাপা বাংলা সংবাদপত্রও রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। যদিও বাংলা ভাষায় সেই প্রথম ব্যাকরণের বইয়ের প্রথম কপি এখনও লন্ডনের মিউজিয়ামেই রয়েছে বলে শোনা যায়। এই প্রদর্শনীতে তার একটি কপি রয়েছে। এছাড়াও তাল পাতার উপর লেখা পুঁথিও রয়েছে। প্রিয়াঙ্কাদেবী জানালেন, পঞ্চানন কর্মকারের মৃত্যুর পর ১৮০৯ সালে চারটি টাইপসেটিং মেশিন নিয়ে আসা হয়। ওই মেশিনগুলোও এই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে।’ প্রদর্শনীর কোনও প্রবেশ মূল্য নেই। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলবে। প্রিয়াঙ্কাদেবী নিজে পুঁথি, হরফের বিষয়বস্তু বুঝিয়ে দেবেন দর্শকদের। প্রায় ১০০টি পুঁথি ও ৩০০ হরফ দেখার সুযোগ আগ্রহী দর্শকদের সামনে। -নিজস্ব চিত্র