এই সময়, আসানসোল: যাত্রীবাহী কিংবা পণ্যবাহী রেলে লোকো রানিং স্টাফদের ইঞ্জিনে ওয়াশরুমের দীর্ঘ দিনের দাবি নাকচ করে দিল রেল বোর্ড। লোকো পাইলটদের দাবি ছিল, দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন চালানোয় খাবারের জন্য তাঁদের ব্রেক টাইম দেওয়া উচিত। এই দাবিও সরাসরি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দিল্লির যন্তরমন্তরে অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ সংগঠনের নেতা–কর্মীরা ধরনা প্রদর্শন করেন। এর পরে বৃহস্পতি ও শুক্রবার এই সব দাবি নিয়ে দিল্লিতে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক চলছে।
সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি রামরাজ ভগত বলেন, ‘রেলের লোকো পাইলটদের শূন্যপদ ৩০ হাজারের বেশি। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে এটা পূরণ করা উচিত।’ লোকো পাইলটদের সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কেসি জেমস বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আমরা রেলের এই নির্দেশকে অবাস্তব বলে মনে করছি। রেল বোর্ডের চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার তথা চেয়ারম্যান রেলওয়ে বোর্ডকে আমরা জানিয়েছি, কারও প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে যেতে হলে তার ব্যবস্থা করতে হবে।’
সভাপতি রামরাজ বলছেন, ‘বহু সুপারফাস্ট ট্রেন রয়েছে যেগুলো কোনওরকম স্টপ ছাড়া টানা ছয়–সাত ঘণ্টা চলে। মনে রাখতে হবে, এখন শুধু পুরুষ নয় বহু মহিলাও লোকো পাইলটের কাজ করছেন। ওয়াশরুমে যেতে হলে তাঁরা কোথায় যাবেন? বহু সময়ে গভীর জঙ্গল কিংবা পাহাড়ের ভিতর দিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। এই অবস্থায় কেবিনের ভিতরে টয়লেট থাকা জরুরি।’
একইসঙ্গে রামরাজ জানাচ্ছেন, রেলের জারি করা নতুন নির্দেশে বলা হয়েছে, আগে ঘণ্টায় ১১০ কিমি গতিতে চলা ট্রেনকে হাই স্পিড বলে ধরা হতো। এখন তা বদলে ১৩০ কিমি গতিতে চলা ট্রেনগুলোকেই হাই স্পিড হিসেবে ধরা হবে। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, নয় ঘণ্টার বেশি ডিউটি করানো চলবে না। আদালতের নির্দেশানুসারে সপ্তাহে মোট ৪৬ ঘণ্টা বিশ্রামের ব্যবস্থা করতেই হবে। পর পর দুই রাতের বেশি লাগাতার ডিউটি করানো যাবে না। এতে রেল দুর্ঘটনাও কমবে বলে দাবি তাদের।
রামরাজ জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে শুক্রবার বৈঠক শেষে তাঁরা পরবর্তী আন্দোলনের কথা জানাবেন। তবে গত এক বছর ধরে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায় যত ইঞ্জিন নতুন করে তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে টয়লেটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।