আইনজীবীদের কাজে বাধা, ফতোয়া না মানলেই বহিষ্কারের হুমকি, রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ১১ এপ্রিল ২০২৫
দীর্ঘদিন ধরে কল্যাণী আদালতে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন জনা কয়েকজন আইনজীবী। কোন আইনজীবি কার সঙ্গে কথা বলবেন সেটাও ঠিক করে দেন তাঁরা। আর তাঁদের ফতোয়া না মানলেই বার থেকে বহিষ্কারের হুমকিও দেওয়া হয়। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আইনজীবীরা কাজে বাধা পাচ্ছেন নদিয়ার কল্যাণী আদালতে। এমনই অভিযোগ তুলে দায়ের হওয়া মামলায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল কলকাতা হাইকোর্ট।
আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ, কল্যাণী আদালতে এই অবস্থা দীর্ঘদিনের। ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না অনেক আইনজীবী। কিন্তু, গত বছর অগস্ট মাসে কল্যাণী আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থ প্রতিম দত্তের এজলাস বয়কট এবং বিচারককে হেনস্থা করার পর হাইকোর্টের এক আইনজীবী প্রতিবাদে নামেন। আক্রান্ত তিন আইনজীবী হাইকোর্টে মামলা করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পথে নামেন আইনজীবীদের একাংশ।
আদালতের আইনজীবী সুকুমার গোস্বামীর করা সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ গত সপ্তাহে জেলা বিচারককে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মেনেই বৃহস্পতিবার জেলা বিচারক শুভঙ্কর সেন কল্যাণী আদালত পরিদর্শনে আসেন। মামলাকারী আইনজীবী এবং অভিযুক্ত উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। পরে নিরাপত্তার দাবিতে জেলা বিচারক সহ প্রশাসনের কর্তাদের চিঠি দেন আদালতের ২০ জন আইনজীবী। বৃহস্পতিবার কল্যাণী ক্রিমিনাল কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এই চিঠি দিয়েছেন। সেখানে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আক্রান্ত আইনজীবীদের নামের তালিকাও দিয়েছেন তিনি। এদিন চিঠিতে এই ভয়ের পরিবেশ দূর করার পাশাপাশি আক্রান্ত আইনজীবীদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কল্যাণী ক্রিমিনাল কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মুকুল বিশ্বাস বলেন, ২০১২ সালে দুই মহিলা আইনজীবীকে বারের ঘরের আটকে রেখে শ্লীলতাহানি করা হয়। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস চলছে। তাঁর অভিযোগ, জেলা বিচারক নিজেই পক্ষপাতদুষ্ট। তার নামেও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সন্ত্রাসের পরিবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে। যারা অন্যায় করছে, আর যারা অন্যায়কে সমর্থন করছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।’