• পুলিশকে ‘সংবেদনশীল’ হওয়ার বার্তা সায়নীর, ব্রাত্য-কুণালদের উল্টো সুর যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদের! প্রশ্ন দলের অন্দরেই
    আনন্দবাজার | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • কসবার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) দফতরে চাকরি হারানো শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠি এবং লাথি নিয়ে আলোড়িত বঙ্গ রাজনীতি। সেই ঘটনায় পুলিশ তথা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সুর চড়ালেও তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীরা প্রায় সকলেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও চাকরি হারানো শিক্ষকেরা ডিআই অফিসে গিয়েছিলেন? কিন্তু ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষদের ঠিক উল্টো সুর শোনা গেল যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের গলায়।

    কসবার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সায়নী বলেছেন, ‘‘যাঁদের সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটেছে তা, দুর্ভাগ্যজনক। যাঁদের রুজি-রুটি চলে গিয়েছে, যাঁরা যোগ্য প্রার্থী, যাঁদের রাজনীতির বলি হতে হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে এই মুহূর্তে আরও মানবিক হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়।’’ সায়নী আরও বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকেও অনেক সংবেদনশীল হয়ে ইস্যুটাকে হ্যান্ডল (পরিস্থিতি সামলাতে) করতে হবে।’’

    ডিআই অফিসের ঘটনা প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেছেন, ‘‘ডিআই অফিসে গিয়েছেন কেন? এক দিকে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছেন। আবার একই সঙ্গে ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করছেন। দুটো কী করে একসঙ্গে চলতে পারে?’’ কুণাল এবং ফিরহাদেরও মৌলিক প্রশ্ন, শিক্ষকেরা কেন গেলেন ডিআই অফিসে? তার পরে সায়নীর কথা নিয়ে শাসকদলের অন্দরেও আলোচনা শুরু হয়েছে। এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘সরকার এবং দলের উপর যখন চাপ তৈরি হয়, তখন একাংশ সামনে দাঁড়িয়ে মোকাবিলা করে আর অন্য অংশ ‘বিবেক’ সেজে ফুটেজ নিতে চায়।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আরজি কর পর্বেও এমন অনেক নজির আমরা দেখেছিলাম।’’

    আবার সায়নী-ঘনিষ্ঠ নেতাদের বক্তব্য, ‘‘সাংসদ তো ভুল কিছু বলেননি। অতীতে যখন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ কিংবা আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচীকে বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তখনও তো দলেরই অনেকে সমালোচনা করেছিলেন।’’ উল্লেখ্য, এই দুই ক্ষেত্রেই সরব হয়েছিলেন কুণাল। যদিও সেই সময়ের কুণালের বক্তব্য ছিল, পুলিশ অতি সক্রিয়তা দেখানোয় বিরোধী পক্ষের এই দু’জনই অযথা প্রচার পেয়েছিলেন।

    কসবা ডিআই অফিসের ঘটনা নিয়ে বুধবারই কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘ওই ভাবে লাথি মারা কখনওই কাম্য নয়। পুলিশকর্মীদের বলাই হয়েছে, এ রকম যাতে কিছু না ঘটে।’’ আবার বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, এক বিক্ষোভকারী বলছেন, ‘‘পেট্রল নিয়ে আয়, জ্বালিয়ে দেব।’’ যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার ডট কম যাচাই করেনি। এই পরিস্থিতিতেই পুলিশকে সংবেদনশীল হওয়ার বার্তা দিলেন যাদবপুরের সাংসদ সায়নী। যা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হল দলের অন্দরেই।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)