• ‘বলপ্রয়োগ’কে ধিক্কার, পথের প্রতিবাদে বিরোধী
    আনন্দবাজার | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • শিক্ষকদের উপরে পুলিশের ‘বলপ্রয়োগে’র প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে পথে নেমে আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়াল বিরোধীরা। পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি, পুলিশের মারধর নিয়ে ‘অন্য সুর’ শোনা গিয়েছে শাসক দলেরই মন্ত্রী থেকে সাংসদের মুখে।

    কসবায় শিক্ষকদের মারধর করার প্রতিবাদে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়, বিধাননগরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি। কসবার ডিআই দফতরের সামনে যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁয়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়েছে। সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতা রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষেরা এসএসসি দফতরের সামনে অবস্থানরত চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। অন্যত্র বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের হুঁশিয়ারি, “লাথি, লাঠি, মামলা, হামলা— হিসাব লিখে রাখছি। সুদে-আসলে ফেরত দেওয়া হবে।’’ আবার কোলাঘাটে এ দিন শিক্ষামন্ত্রীকে ‘ভৃত্য বসু’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী!

    অশান্তির জন্য বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘ইন্ধন’ দেওয়ার অভিযোগই ফের তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। চাকরিহারাদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষকদের যেখানে স্কুলে যেতে বলেছেন, সেখানে কেন সরকারি দফতর দখল করতে যাবেন? এমন কাজ করবেন না যাতে প্রমাণ লোপাট হয়েছে এটা বলা যায়।” যদিও ‘অন্য সুর’ শোনা গিয়েছে তৃণমূলেই। চুঁচুড়ায় তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে কসবার ঘটনা নিয়ে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “উচিত হয়নি।” বিরোধীদের নিশানা করার সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষও মারধর নিয়ে বলেছেন, “উচিত নয়। পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি আরও সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখতে হবে।”

    শিক্ষকদের মারধরের প্রতিবাদে রাসবিহারী মোড় থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত মিছিল করেছে বামফ্রন্ট। যোগ দিয়েছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, কল্লোল মজুমদার-সহ কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। সুজনের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত! যে পুলিশ লাথি মেরেছেন, তাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিন নগরপাল। সংগঠিত লুটের জন্য শিক্ষা এবং পরের প্রজন্ম ধ্বংস হচ্ছে।’’ কলেজ স্ট্রিট এবং যাদবপুরে ৮বি-তে বিক্ষোভ, অবরোধ করেছিল এসএফআই। হাওড়ায় এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআইয়ের প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বেধেছিল। কলেজ স্কোয়ার থেকে প্রদেশ কংগ্রেসের মিছিলে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, সুব্রতা দত্ত, সুমন পাল প্রমুখ। এসএফআইয়ের অবরোধ চলছিল বলে তাঁরা সৌজন্য দেখিয়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মিছিল নিয়ে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করেন। পরে অমিতাভ বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার রাজনীতি করতে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের রাহুল গান্ধীর কাছে নিয়ে যাননি। তাঁদের চাকরি ফিরে পাওয়ার পথ খুলতেই এই সাক্ষাৎকার ছিল। তাঁর দলের লোকেরা টাকা নিয়ে ‘অযোগ্য’দের চাকরি দিয়েছে, সেই পাপ ঢাকতে মুখ্যমন্ত্রী ‘যোগ্য’দের নিয়ে রাজনীতি করছেন!’’

    তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের খোঁচা, “যাদবপুরে অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে যখন রাম-বামের ছাত্রেরা পদাঘাত করলেন, তখন নিন্দা হল না কেন, সেটা ভাল? আর হামলাকারী, পুলিশকে মারার পরে শিক্ষকদের উপরে পাল্টা প্রতিক্রিয়া হলে, সেই লাথিটা খারাপ?’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)