বিভিন্ন জেলায় বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কার্যালয়ে গিয়ে বুধবার অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। কলকাতায় সে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে প্রতিবাদী শিক্ষকদের উপরে পুলিশি মারধরের যে ছবি উঠে এসেছে, তা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। ব্যতিক্রম নয় বীরভূমও।
বুধবারের ঘটনার চর্চা বৃহস্পতিবারও জেলায় দিনভর অব্যাহত থেকেছে। কেউ প্রকাশ্যে, কেউ আড়ালে, কেউ আবার সমাজমাধ্যমে এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা আজ, শুক্রবার, এসএসসি ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন। সে পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে বৃহস্পতিবার তাঁরা দিনভর নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন। পরিকল্পনার মাঝেও জনমত গঠনের কাজ করে গিয়েছেন তাঁরা।
চাকরিহারা শিক্ষক সুবল সাহা, বিউটি সাহারা জানান, ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে যদি বার বার মার খেতে হয়, তা হলে তাঁরা মার খাবেন, কিন্তু ফিরে যাবেন না। বুধবারের এই ঘটনা আজকের এসএসসি ভবন অভিযানকে আরও তীব্র করবে বলেও তাঁদের অভিমত। এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলেন, “পুলিশ হয়তো ভেবেছিল, বেড়ে ওঠার আগেই মারধর করে আন্দোলন ভেঙে ফেলবে। কিন্তু তা পারেনি। শিক্ষকদের আজ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, কোনও ভয় দেখিয়েই তাঁদের রোখা যাবে না। প্রাপ্য না-পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন থামবে না।”
শিক্ষকদের মারধরের প্রতিবাদ এ দিন সরব হন অন্য পেশার লোকজনও। সিউড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জিষ্ণু ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষকেরাই আমাদের জীবনের পথ দেখিয়েছেন। তাঁদের এ ভাবে মার খেতে দেখার দৃশ্য মেনে নেওয়াই যায় না। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সর্বস্তরের মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এখন আমাদের উচিত যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ানো।”
সিউড়ি শহরের সঙ্গীত শিল্পী তথা প্রশিক্ষক শান্তব্রত নন্দন বলেন, “শিক্ষক হয়ে শিক্ষক শ্রেণির এ অপমান অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সমাজ তৈরির কারিগরদের এ অপমান প্রাপ্য নয়। আশা করি পরিস্থিতির বদল হবে, যোগ্য শিক্ষকরা চাকরি ফিরে পাবেন।’’
তবে পাল্টা প্রচার চালানো হচ্ছে তৃণমূলের একাংশের তরফেও। চাকরিহারা শিক্ষকদের নাম করে সিপিএম ও বিজেপির কিছু কর্মী ইচ্ছাকৃত ঝামেলা পাকিয়ে ছিলেন বলেই পুলিশ হাতে লাঠি তুলে নিতে বাধ্য হয়, এমনই তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে সমাজমাধ্যমে।