প্রয়াত রেজ্জাক মোল্লা, বাম-তৃণমূল দুই আমলেরই মন্ত্রী অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘদিন, শোকপ্রকাশ মমতার
আনন্দবাজার | ১১ এপ্রিল ২০২৫
প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল দুই আমলেরই প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাকের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০।
রেজ্জাকের প্রয়াণে নিজের এক্স হ্যান্ডলে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই এক সময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি তাঁর পরিবারবর্গ, অসংখ্য অনুগামী ও শুভানুধ্যায়ীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’’ প্রাক্তন সহকর্মী রেজ্জাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়ি যাচ্ছেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন । অনেক দিন ধরে দূরেও ছিলেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে। ১৯৭২ সালে ভাঙড় বিধানসভা থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। নিজেকে ‘চাষার ব্যাটা’ বলে পরিচয় দিতে ভালবাসতেন। তিনি প্রথম বার মন্ত্রী হন ১৯৮২ সালে। বামফ্রন্টের ভূমি সংস্কার দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। জ্যোতি বসু এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দু’জনেরই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন রেজ্জাক। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। সে বার ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী হন। ছিলেন ২০২১ সাল পর্যন্ত। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, অসুস্থতার কারণেই এর পর রাজনীতিতে দূরে সরে গিয়েছিলেন রেজ্জাক।
রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পরে নিঃসঙ্গ রেজ্জাক ঘনিষ্ঠ মহলে বহু বার বলেছেন, সিপিএমের লোকজন তাঁর অসুস্থতার খবর নিলেও বর্তমান শাসকদলের কেউ খবর রাখে না। যদিও তাঁর এককালের ‘শিষ্য’ তথা বর্তমানে তৃণমূলের ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা মাঝে রেজ্জাকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। তাতে আপ্লুতও হয়েছিলেন রেজ্জাক। প্রসঙ্গত, এক সময়ে রেজ্জাকের হাত ধরেই রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ শওকতের। সে সময়ে রেজ্জাকের ‘দুই হাত’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন শওকত মোল্লা এবং সাত্তার মোল্লা।